মে মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়লো
চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। কিন্তু কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ হয়েছে। তবে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাসিক হালনাগাদ ভোক্তা মূল্য সূচকে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের মে মাসে যে পণ্য ১০০ টাকায় কেনা সম্ভব হয়েছিল ২০২৪ সালের মে মাসে তা কিনতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৮৯ পয়সায়।
ভোক্তা মূল্য সূচকে দেখা যায়, মে মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে, এপ্রিলে যা ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ।
খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের নিচে অবস্থান করছে। মে মাসে খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ হয়েছে, এপ্রিলে যা ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ কমাতে বিকল্প পথ ছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে যেসব উৎস থেকে কর আদায় করা হচ্ছে, এর বাইরের উৎসগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। সে উৎসগুলোকে আমরা এখনো বের করতে পারিনি। বিশেষ করে যাদের টিন নম্বর আছে, তাদের সবাই রিটার্ন দেয় না। এ সংখ্যা যদি বাড়ানো যেত যাদের টিন আছে কিন্তু কর দেয় না, এরকম সংখ্যা অনেক।
তিনি বলেন, ধরা যাক এক কোটি যদি টিন নাম্বার নিয়ে থাকে তাদের ৩০ থেকে ৩৫ লাখ কর দেয় মাত্র। এ সংখ্যাটা বাড়াতে পারলে প্রত্যক্ষ কর বাড়ত। আর এই বছর বিভিন্ন নতুন নতুন সূত্র থেকে কর নিতেই হবে। কারণ কর যদি না বাড়ানো যায়, তাহলে আমাদেরকে অনেক বেশি ঋণ করতে হয়। ঋণের সুদ ব্যয়েই বাজেটের বড় অংশ চলে যায়। টাকা সেখানে চলে গেলে আমি শিক্ষায় কী দেব, স্বাস্থ্যে কী দেব।
এ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ যাতে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বড় যারা কর দিতে পারে তাদের দিকে আরও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে প্রত্যক্ষ করের দিকে বেশি নজর দিতে হবে।