সামাজিক সুরক্ষা বলয়ে বাড়ছে বাজেট
প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রান্তিক শ্রেণির কথা বিবেচনায় রেখে সামাজিক সুরক্ষা সেবা বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে এ বাজেটে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বয়স্কদের জন্য। এতে ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ছে ২ লাখ। অর্থাৎ প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে আগামী অর্থবছরে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখ বাড়িয়ে ৬০ লাখ ১ হাজার জনে উন্নীত হবে।
এছাড়া, ভাতাপ্রাপ্ত বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীর সংখ্যা বিদ্যমান ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জন থেকে বাড়িয়ে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতার উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ায় এ দু’খাতে সরকারের মোট ব্যয় বাড়বে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
এছাড়া আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের প্রায় সকল অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নতুন করে ৩ লাখ ৩৪ হাজার অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি, মা ও শিশু সহায়তা ভাতা এবং হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে ভাতার উপকারভোগীও বাড়ছে।
এদিকে দেশে যে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অতিরিক্ত ২ হাজার কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসা গবেষণার জন্য আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অতিরিক্ত ২০০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে বিজ্ঞানের মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার গুরুত্ব বিবেচনায় সমন্বিত স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিলে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করছি। এছাড়া, আধুনিক ও মান-সম্পন্ন স্বাস্থ্যশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অধিক সংখ্যক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, চিকিৎসা শিক্ষায় সকল স্নাতকোত্তর ডিগ্রিকে এক প্লাটফর্মের আওতায় নিয়ে আসা, পরীক্ষা পদ্ধতির আধুনিকায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাস্থ্যসেবাখাতকে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রবর্তন করেন। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গ্রামীণ জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং ২৭ ধরনের ঔষধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এবং নীতি সহায়তার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বমানের ঔষুধ উৎপাদনে সক্ষম। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৯৮ ভাগ ঔষধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। একইসঙ্গে পরিবার কল্যাণ সেবা সহজীকরণসহ মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে দক্ষ ধাত্রী ও মিডওয়াইফের মাধ্যমে নিরাপদ প্রসব সেবা দেওয়া হচ্ছে।