নেপাল থেকে আসবে বিদ্যুৎ
আগামীকাল মঙ্গলবার নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করবে বিদ্যুৎ বিভাগ।
টেন্ডার ছাড়া সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এ বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকার ৬৫০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ কেনার পরিকল্পনা করেছে। প্রস্তাব অনুসারে বাংলাদেশ সরকার গড়ে প্রতি বছর ১৩০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ কিনবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতীয় সঞ্চালন চার্জ ও ট্রেডিং মার্জিন হিসাব করলে কিলোওয়াটপ্রতি খরচ হবে ৯ টাকা।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও নেপাল বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রথম একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। ওই সমঝোতার আওতায় দুই দেশের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ আমদানি বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। এমনকি সেই বৈঠকগুলোতে নেপালে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিষয়টিও উঠে আসে।
তবে এক দশক ধরে এসব আলোচনা চললেও তা ছিল মৌখিক। এবার জি টু জি চুক্তি মাধ্যমে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসবে। নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হলে দেশে মোট আমদানি বিদ্যুতের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, যা বাংলাদেশের গ্রিডভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ১১ শতাংশ।
দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বর্তমানে প্রতি কিলোওয়াটে ১২-১৩ টাকা। জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুতের দাম কিলোওয়াটপ্রতি ১৮-২০ টাকার মতো। সেই তুলনায় নেপালের জলবিদ্যুৎ অনেকটাই সাশ্রয়ী। এতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কিছুটা হলেও কমবে এবং বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে জানায় বিপিডিবি।
এদিকে, ভারতের ঝাড়খন্ডে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কেনা বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়েছে ৪ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। এই বকেয়া বিল আদায় করতে গত ২৯ মে আদানি গ্রুপের পরিচালক প্রণব বিনোদ আদানি ঢাকায় এসে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি জানান, বকেয়া পরিশোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আলোচনা হলেও বকেয়া নিয়ে আদানির পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই।
অন্যদিকে, আদানি গ্রুপের পরিচালক প্রণব বিনোদ আদানি সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেক। তাই ভাবনায় রয়েছে নতুন বিনিয়োগের বিষয়টি।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে আদানি গ্রুপের ঝাড়খন্ডের সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে আবার বিদ্যুৎ বিক্রির প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছিল।