ভারত থেকে পাইপলাইনে আসবে রাশিয়ার ডিজেল
প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে ৩০,০০০ মেট্রিক টন ডিজেল পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করবে বাংলাদেশ সরকার। ভারত থেকে যে ডিজেল আসবে তা মূলত রাশিয়া থেকে আমদানি করা। অন্যান্য দেশের অনেক সস্তায় জ্বালানি তেল বিক্রি করে থাকে রাশিয়া। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত ও চীন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ভারত থেকে ডিজেল আমদানির প্রস্তাব তুলবে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী সভা কমিটির কাছে। ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভার ওই সভা আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুসারে ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের (এনআরএল) কাছ থেকে চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ৩০,০০০ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হবে।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল। এর সিংহভাগ আসে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে। অনেকদিন ধরেই কম খরচে ডিজেল আমদানির চেষ্টা করছে সরকার। ভারত থেকে সরাসরি ডিজেল আনতে তৈরি করা হয়েছে পাইপলাইন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই পাইপলাইন দিয়ে পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু হতে পারে। আমদানিকৃত এই ডিজেল বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হবে লিটারপ্রতি ১০৭ দশমিক ৭৫ টাকায়।
দেশে বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসির পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৬০ লাখ টন। এর মধ্যে ৪৬ লাখ টন ডিজেল, যার ৮০ শতাংশই সরাসরি আমদানি করা হয়। বাকিটা স্থানীয় পরিশোধনাগার থেকে পাওয়া যায়।
বর্তমানে ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে নিয়মিত ডিজেল আনে বিপিসি। ২০১৭ সাল থেকে ট্রেনের ওয়াগনে করে আসছে এ তেল। তবে বছরে এর পরিমাণ ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টনের বেশি নয়। এ রিফাইনারি থেকে তেল আনার পরিমাণ বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন।
বিপিসি সূত্র বলছে, ওয়াগনে করে ডিজেল আনতে গেলে পরিবহন খরচ বেশি পড়ে। এছাড়া অপচয়ের ঝুঁকি বাড়ে। পাইপলাইনে আনা হলে তা সাশ্রয়ী হবে। তবে প্রতি লিটারে ঠিক কতটা সাশ্রয় হবে, তা এখনই বলতে পারছে না প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
বছরে ১০ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা যাবে এ পাইপলাইন দিয়ে। প্রাথমিকভাবে বছরে দুই থেকে তিন লাখ টন ডিজেল আনার পরিকল্পনা করছে বিপিসি। এরপর খরচ ও চাহিদা বুঝে সরবরাহ বাড়ানো হবে। চুক্তি অনুসারে সরবরাহ শুরুর পর ১৫ বছর পর্যন্ত এ পাইপলাইন দিয়ে ভারত থেকে ডিজেল নেবে বিপিসি।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাইপলাইনের কাজ উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।