ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় নামছে মোবাইল অপারেটররা

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করতে যাচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশের ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) নেতারা বলছেন, ক্যাবেল না টানলে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা নেই।

জানা গেছে, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসির) অনুমোদন সাপেক্ষে প্রথম অপারেটর হিসেবে সোমবার ঢাকার এক হোটেলে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা উদ্বোধন করতে যাচ্ছে গ্রামীণফোন। দ্বিতীয় অপারেটর হিসেবে ‘ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড’ নিয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে রবি আজিয়াটা।

ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড একটি মোবাইল নেটওয়ার্কভিত্তিক সেবা যেখানে একজন গ্রাহক তারবিহীন সংযোগের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেল প্রথম মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ধারণা নিয়ে আসে বাংলাদেশ জুম সেবার মাধ্যমে। পরবর্তীতে ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের মাধ্যমে বাংলালায়ন ও কিউবির মতো প্রতিষ্ঠান মুখ থুবরে পরে পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও গ্রাহক চাহিদা না থাকায়।

এবার ওয়াইম্যাক্সের আদলে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা আনছে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররা। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের টেলিকম খাতে বিনিয়োগ করা টেলিনর, আজিয়াটা ও ভিওনের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ভয়েস সেবার বাইরে সেবার পরিধি বাড়াচ্ছে। কারণ, মুনাফার অধিকাংশ আসছে ডেটা বিজনেস থেকে।

অপারেটরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রচলিত ওয়াইম্যাক্স কানেকশনের মতো ‘প্লাগ এন প্লে’ হবে না ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড। মূলত প্রথমে বেশি ভলিউমের ইন্টারনেটের চাহিদাসম্পন্ন গ্রাহকের অবস্থান পর্যালোচনা করা হবে। অপারেটরের টিমের রিপোর্টে ‘যোগ্য’ হলে তাকে কানেকশন দেওয়া হবে।

এই সেবায় উচ্চগতির ইন্টারনেট দরকার, যা ফাইভজি ছাড়া সম্ভব হবে না। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাইরে আপাতত এই সেবা পাওয়া যাবে না বলে জানা গেছে। দেশের টেলিকম অপারেটরগুলো এখনো বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি চালু করতে অনাগ্রহী হওয়ায় এই সেবা সম্প্রসারণে সময় লাগবে।

আইএসপিএবি বলছে, মোবাইল অপারেটররা ব্রডব্যান্ড চালু করলে তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবাদানকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সম্প্রতি মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস চালুর অনুমতি দিয়েছে বিটিআরসি। এখানে তারের ঝামেলা ছাড়াই উচ্চ গতির ফাইভ-জি ব্রডব্যান্ড সেবা পাবেন গ্রাহকরা।

আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, মোবাইল অপারেটররা ব্রডব্যান্ড সেবা দিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে তাদের প্রচারণায় ‘ওয়্যারলেস’ শব্দ ব্যবহার করা উচিত এবং কোনো প্রকার ক্যাবেল টানা থেকে বিরত থাকা উচিত তাদের।

মোবাইল অপারেটররা বলছে, এখানে ক্যাবেলের কোনো বিষয় নেই। আর উন্নত বিশ্বে মোবাইল কোম্পানিই ব্রডব্যান্ড সেবা দিচ্ছে। এখানে প্রচলিত আইএসপিদের সাথে কোনো সমস্যা নেই।

টেলিকম অপারেটরদের অ্যাসোসিয়েশন অ্যামটবের হিসাবে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগের বাইরে রয়ে গেছে। মে মাসে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে ১২.৭৮ কোটি হয়েছে, যা এপ্রিলে ১২.৫২ কোটি ছিল। প্রচলিত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.৩৪ কোটিই রয়েছে।