ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকবে বেক্সিমকোসহ ৬ কোম্পানির
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বেক্সিমকোসহ ছয় কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দামের সীমা) প্রত্যাহার করে নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যে নির্দেশনা জারি করেছিল তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অর্থাৎ বেক্সিমকোসহ ছয় কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্বিক আহমেদ শাহ গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএসইসি থেকে সার্কুলারটি কার্যকর না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আমরা সার্কুলারটি কার্যকর করছি না।
যখন বিএসইসির চেয়ারম্যান অফিসে আসছিলেন না এবং কোনো কমিশন সভা হয়নি, সেই সময় বেক্সিমকোসহ ছয় কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় সই করেন।
কমিশনের ঐ সিদ্ধান্তে আজ (রোববার) থেকে বেক্সিমকো, খুলনা পাওয়ার ও শাহজিবাজার পাওয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার হওয়াক কথাছিল। আর আগামী ১৪ আগস্ট থেকে বিএসআরএম লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামে ফ্লোর প্রাইস থাকবে না বলে জানানো হয়।
তবে বিএসইসির এই নির্দেশনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বিএসইসির ১৯৬৯ অধ্যাদেশের ২০এ ধারার অধীনে এ সংস্থার চেয়ারম্যান একা কোনো আদেশ বা নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। এ ক্ষমতা শুধু কমিশনের।
১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী, কমিশন বলতে বোঝায় হলো- বিএসইসি চেয়ারম্যান ও চার কমিশনারদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড এবং এই কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো- পূর্বনির্ধারিত এজেন্ডাসহ আগাম নোটিশে ডাকা কমিশন সভা এবং কোরাম পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে আলোচ্য সূচির ওপর আলোচনা সাপেক্ষে গৃহীত সিদ্ধান্ত।
কমিশনের সিদ্ধান্ত, আদেশ, নির্দেশনা বা নোটিশ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরে বা তার নির্দেশনায় কমিশনের অপর কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ/জারি করতে পারেন।
গত রোববার (৪ আগষ্ট) পর্যন্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী দাপ্তরিক সফরে বিদেশে ছিলেন। গত সোমবারের (৫ আগষ্ট) সাধারণ ছুটির পর মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) থেকে দেশে থাকার পর একদিনও অফিস করেননি। তবে গতকাল শনিবার তিনি বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
শেয়ারবাজারে লাগাতার পতন ঠেকাতে না পেরে, গত চার বছরে কয়েক দফায় শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। প্রথমবার ২০২০ সালে মার্চে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করলেও তুলে নেয়া হয় ২০২১ সালের জুলাইয়ে।
এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আবারো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এ পর্যায়ে শেয়ার লেনদেন ব্যাপক কমে গেলে সমালোচনায় পড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে পর্যায়ক্রমে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বিএসইসি। তবে অদৃশ্য কারণে বেক্সিমকোসহ ছয় কোম্পানির ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত রাখা হয়।