মতিঝিলের ব্যাংক পাড়া থমথমে

ছবি: দ্য মিরর এশিয়া

অর্ন্তবর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর রবিবার প্রথম কার্যদিবসে ইসলামী ব্যাংক পিএলসিসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে গোলযোগ বাধে। এর মধ্যে দেশের প্রধান বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকে দুর্বৃত্তদের হামলায় পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনার পর মতিঝিলের ব্যাংক পাড়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, মতিঝিলের ৪০ দিলকুশার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীদের পাশাপাশি গ্রুপ-৪ কর্মীরা ব্যাংকটির প্রধান ফটকের সিঁড়ি থেকে সামনের দিকটায় নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি করেছেন।

এছাড়া রাস্তায় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িও মোতায়েন রয়েছে। সেখান থেকে পরিবেশের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছেন সেনা সদস্যরা।

এছাড়া রবিবার এস আলম গ্রুপের হয়ে দুর্বৃত্তরা যে স্থানে গুলি করে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের গুরুতর জখম করেছিল সেখানে পলিথিনে ঢেকে চারিদিকে বেরিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাংকটি ঘিরে সড়কের চারদিকে শতশত মানুষের উপস্থিতি। তবে তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলে জানা গেছে।

রবিবার ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে গোলযোগের খবর পাওয়া যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দিলকুশার প্রত্যেকটি ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে কড়া নিরাপত্তার বিষয়টি চোখে পড়েছে। তবে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি কম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই রকম থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে মতিঝিল শাপলা চত্ত্বর থেকে দৈনিক বাংলা ও টিকাটুলি রোডের দুই পাশের ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে। একই ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে পথচারী সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

ইসলামী ব্যাংকে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে এস আলম গ্রুপের দুর্বৃত্তরা হামলার পর প্রধান কার্যালয়, বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা ও পার্শ্ববর্তী এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক হয়ে চলাফেরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গত ৫ জুন শেখ হাসিনার পালিয়ে দেশ ত্যাগের পর ইসলামী ব্যাংকে যুগের সূচনা শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকটি বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একাধিক কর্মকর্তা দ্য মিরর এশিয়াকে জানান, দেশ স্বাধীন হয়েছে। ব্যাংকও স্বাধীন হয়েছে। আমরা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আবারো ইসলামী ব্যাংককে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাব।

আওয়ামী রাহুমুক্ত হওয়ার পর রবিবারই ব্যাংকটিতে বড় ধরনের পদোন্নতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নিচের দিকের যেসব কর্মচারী পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলেন তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। যা গত ৭ আগস্ট থেকেই কার্যকরী হবে বলে ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এছাড়া বিভিন্ন সময় যারা বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের অনেককেই ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এসে ভিড় করছেন। তাদেরকে সর্বশেষ কর্মস্থলে গিয়ে যোগদানের জন্য ব্যাংকটির পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা ব্যাংকের কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।