নগদের ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স স্থগিত
মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদকে দেওয়া ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইন্সেস স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, নগদকে পুর্নগঠন করা হবে। এরপরে যদি তারা ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইন্সেস পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে লাইন্সেস দেওয়া হবে। শুধু নগদ নয়, যারা ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইন্সেস পেয়েছে সবার বিষয় রিভিউ করা হবে। এই লাইন্সেসের কাঠামোগত পরিবর্তন করা হবে। এরপর যদি কেউ লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হয় তাদেরকে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদকে পুর্নগঠন করা হবে। বিদেশ থেকে টেকনলজি হস্তান্তর করে নগদকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। নগদকে বিকাশের মতো পরিণত করার চেষ্টা করব। যাতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হয়।
তিনি বলেন, ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকার পর নগদ ডিজিটাল টাকা তৈরির যে প্র্যাক্টিস করেছে তা সঙ্গত ছিল না। পূর্ববতী সরকারের সময়ে এ ধরনের প্রাক্টিস তো বাংলাদেশে অনেক হয়েছে। নগদের বিষয়টি ব্যতিক্রম নয়। আমরা সেটাকে এখন শুদ্ধ করার চেষ্টা করব। এজন্য আপনাদের সমর্থন দরকার। আমরা পেছনের দিকে তাকাতে চাই না।
বুধবার বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। ডাক বিভাগের নাম করে কিছু ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করে আসছিলেন, তাই জনস্বার্থে সরকার এটি অধিগ্রহণ করেছে। নগদ এখন সম্পূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান। ডাক বিভাগের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি পরিচালনা করবে।
গভর্নর বলেন, নগদে আগের সব ধরনের গ্রাহক সুবিধা বহাল থাকবে, তাই গ্রাহকদের বিচলিত হওযা কোনো কারণ নেই। বরং এখন নগদ আরো স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, মোবাইল আর্থিক সেবাদান প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে দেড় লক্ষ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বছরে কত হয় ১৮ লাখ কোটি টাকা। এটা সবে শুরু, এটা আরো দশগুণ বাড়বে। সেই জন্য দুইটা প্রতিষ্ঠানকেই কাজ করতে হবে। নগদকেও কাজ করতে হবে, বিকাশকেও কাজ করতে হবে। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানই নতুন জায়গা গ্রাহক খুঁজছে। আমরা খালি টাকা নিচ্ছি আর নিচ্ছি। এটা কোন ব্যবসা না। আসল ব্যবসা হচ্ছে সব ব্যবসায়িক লেনদেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিযোগিতা হলে সেবার মান বাড়বে এবং সেবার দামটা কমে আসবে। খরচও কমে আসবে। আমার যদি বেশি টাকা থাকে, টাকা তো সঞ্চয় করব; অথবা খরচ করব। আমি ওয়ালেটে সঞ্চয় করতে পারি। ক্যাশ আউট যে ধারণাটা, এটা যদি সহজে পাঠিয়ে দিতে পারি তবে খরচ নিয়ে আর ভাবনা থাকবে না। তা হলে বিষয়টি হচ্ছে এই স্তরে নিয়ে যেতে হবে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ক্যাশ আউটের দিকে তাকাবে না। সেই স্তরে নিয়ে যেতে পারি তখন আমরা সত্যিকার অর্থ বুঝতে পারব। আমরা কিছু লক্ষ্য অর্জন করেছি। আমি আমাদের উদ্দেশ্যটা বললাম।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকটা নগদ গ্রাহককে স্বত্বিতে রাখতে চাই। আমি বলতে চাচ্ছি আপনারা যেভাবে নগদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন সেই ভাবেই ব্যবসা করতে পারবেন। কোন কিছুর ব্যতয় হবে না। কোন কিছুর পরিবর্তন হবে না। আগে যে ডিসকাউন্ট পেয়েছেন সেটাই পাবেন, যে রেইট দেওয়া আছে সেটাই থাকবে। সেটা আস্তে আস্তে ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে সেই সব রেইট ও ডিকাউন্ট পরিবর্তন হবে।