ভারত থেকে আমদানি করেও কমছে না ডিমের দাম
ভারত থেকে আমদানি করা ডিম দেশের বাজারে আসলেও কমেনি ডিমের দাম। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি ভারত থেকে দুই লাখ ৩১ হাজার ৮০০টি ডিম আমদানি করার অনুমতি দিয়েছিল সরকার। পর্যায়ক্রমে আরও আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। এর পরও দেশের বাজারে এখন পর্যন্ত কমে আসেনি ডিমের দাম। বরং, সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ডিমের দাম। এ নিয়ে বিক্রেতারা কোনো রকম কথা বলতে না চাইলেও ক্ষোভ দেখা গেছে ক্রেতাদের মধ্যে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাজধানীর গোপীবাগ এবং কাপ্তান বাজার এলাকার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম ডজনপ্রতি ডিম ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। তবে বাজারের তুলনায় পাড়া-মহল্লার দোকানে আরও পাঁচ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে মুরগির ডিম।
কাপ্তান বাজারে কেনাকাটা করতে আসা আমিনুল হক বলেন, ‘যারা নিয়মিত মাছ মাংস খেতে পারে না, তাদের জন্য ডিমই ছিল ভরসা। এখন দেখি দিন দিন এর দামও বাড়তে শুরু করেছে। শুনেছি ভারতীয় ছোট ডিম বাজারে এসেছে। সেই ডিমের দাম সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হালি, সেটি এখন ৫৫ টাকা হালি। সরকার এগুলো কি দেখে না? কীভাবে ডিমের দাম বাড়ায়। কেউই নেই এ বিষয়গুলো দেখার।’
তিনি বলেন, ‘সবাই ধারণা করেছিল বিগত সরকার ক্ষমতা থেকে সরে গেলে সবকিছুর দাম কমবে। এখন তো দেখছি কিছুই কমছে না। তাহলে সরকার পরিবর্তন করে মানুষের লাভ হলো কী? আমরা সাধারণ মানুষ, আমরা দু-চারটা ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচতে পারলেই হলো।’
তিনি আরও বলেন ,কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরেই ঢাকার বাজারে ডিমের দাম চড়া রয়েছে; ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। এর আগে ডজন ১৫০ টাকার নিচে ছিল।
দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা চার কোটি। উৎপাদন হয় সাড়ে চার কোটি। সাড়ে পাঁচ কোটি মুরগি থেকে এই ডিম উৎপাদন হয় বলে জানিয়েছেন খামারিরা। বাজারে যে ডিমের চাহিদা রয়েছে তার ৮০ শতাংশ উৎপাদন করছে প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিরা।
এদিকে, সরকার বিদেশ থেকে ডিম আমদানি বন্ধ না করলে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা চার কোটি পিস। ডিমের উৎপাদন রয়েছে সাড়ে চার কোটি পিস। চাহিদার থেকে যেখানে উৎপাদন বেশি হচ্ছে, সেখানে ডিম আমদানির প্রশ্নই আসে না।