পোশাক খাতে বড় সুখবর

পোশাক খাতে বড় সুখবর

দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ধাক্কা লেগেছে তৈরি পোশাক শিল্পেও। বিদেশি ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে পারেন-এমন আশঙ্কা করছিলেন এ শিল্প সম্পৃক্তরা। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল বড় সুখবর। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ থেকে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করেননি বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ক্রেতা। কারখানা মালিকদের জরিমানাও করেনি কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানি।

সম্প্রতি মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস রিসোর্স সেন্টারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

২০ ক্রেতা ও কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস রিসোর্স সেন্টার। এসব ক্রেতা ও কোম্পানির মধ্যে ক্রয়াদেশ স্থানান্তরের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ১২টি কোম্পানি। ঐ সময় কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানি জরিমানাও করেনি কারখানা মালিকদের।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এ খাতে অন্তত সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেরিতে পণ্য ডেলিভারি, পরিবহন খরচ এবং ঝুঁকি বৃদ্ধি, সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন, অতিরিক্ত সময় ধরে গুদামজাত। পণ্য সরবরাহের সময় বেড়ে যাওয়ায় ক্রয়াদেশ বাতিলের ঝুঁকিতে পড়েন কারখানা মালিকরা। সেই ঝুঁকি এড়াতে শ্রমিকরা বাড়তি কাজ করেন এবং তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ও পরিবহনের ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার মজুরির দায় মেটানোও ছিল মালিকদের জন্য চ্যালেঞ্জের।

এদিকে আন্দোলনের সময় কোনো আদেশ বাতিল-স্থানান্তর হয়নি বা জরিমানা করাও হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পোশাক খাতে যে অস্থিরতা দেখা দেয় তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পোশাক মালিকরা। তারা জানিয়েছেন, কিছু ক্রেতা এরই মধ্যে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করেছে।

পোশাক খাতে স্বস্তি ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার ও মালিকপক্ষ। ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে এক বছরের জন্য সহজ শর্তে ঋণ চেয়েছে বিজিএমইএ। সরকারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে সহায়তার আশ্বাস। শ্রমিকরা যেসব দাবিতে আন্দোলন করছিলেন সেগুলোও মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। এতে পোশাক খাতে স্বস্তি ফেরার প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।