স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে থেমে যায় সনি র‌্যাংসের অর্থ পাচারের তদন্ত

সনি র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্সের ৫০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্যপ্রমাণ থাকার পরেও আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ও পুলিশ-প্রশাসনে উৎকোচ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) একাধিক দপ্তরের সচিব এ বিষয়টি ফাইলবন্দি করে রেখেছেন। যে কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি বহাল তবিয়তে ব্যবসা করে যাচ্ছে।

জানা গেছে, এ বছরের শুরুতে সনি র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে একরাম হোসাইনসহ ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চিঠি দিয়েছিল দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে গত ২৩ জানুয়ারি ওই চিঠিতে জানানো হয়েছিল। চিঠিটি সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শককে পাঠানো হয়েছিল।

চিঠিতে বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে সনি র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে একরাম হোসাইন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিনাস হুসাইন, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জানে আলম ও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। ওই চিঠির সঙ্গে অভিযোগসহ সংশ্লিষ্ট ৫৭ পাতার নথিপত্র যুক্ত করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনার পর সনি র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরাম হোসাইন ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জানে আলম তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার বাসায় গিয়ে ৫০ কোটি টাকা ঘুষ দেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তৎকালীন সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়াকে ডেকে অর্থপাচারের এই ঘটনার ফাইলটি ধামাচাপা দিতে বলেন। মন্ত্রীর কথায় সবকিছু থেমে গেলে স্বরাষ্ট্রসচিব, দুদক ও সিআইডির কর্মকর্তারা র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে একরাম হোসাইনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন।

দুদকের এক কর্মকর্তা দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনিয়ম করে দেশের বাইরে অর্থপাচার করেছে, দেশের পটপরিবর্তনের পরও একইভাবে অর্থপাচার করছে।

এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, সনি র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্সসহ বিগত কয়েক বছরের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বেসরকারি এই কোম্পানির বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ রয়েছে। পূর্বের তদন্তের বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনো তথ্য নেই। তবে বর্তমানে দুদক আইন অনুসারে সমস্ত তদন্ত কর্মকর্তা তার দায়িত্ব অব্যাহত রাখছেন বলেও জানান তিনি।