বছরের প্রথম ৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে

বছরের প্রথম ৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে

চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। যা বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের জন্য উদ্বেগজনক। কেননা, তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাকের জন্য অন্যতম বড় রপ্তানি বাজার।

সম্প্রতি ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) একটি হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট মাস পর্যন্ত (আট মাসে) বাজারটিতে ৪৭১ কোটি (৪.১৭ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ কম।

অটেক্সার এ তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ১৩০ কোটি ৩১ লাখ (৫১.৩০ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছেন। এ আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ কম।

পরিসংখ্যানে আরও দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ চীন। তারা চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১ হাজার ৬৯ কোটি ১০ লাখ (১০.৬৯ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ কম। গত বছরের এই আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার।

আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে ৯৫৫ কোটি ৬৯ লাখ (৯.৫৫ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তারা গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি করেছিল ৯ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক। সেই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ০৩ শতাংশ।

তবে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে রপ্তানির এই হ্রাস বাংলাদেশের জন্য চিন্তার বড় কারণ। আবার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম, চীন, ভারত এবং কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে কঠোর প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। এই দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বড় পরিমাণে পোশাক সরবরাহ করে থাকে, ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি বৃদ্ধি এবং পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।