ঢাকা-চট্রগ্রামে টিসিবি’র ট্রাকে করে পণ্য বিক্রয় কর্মসূচি শুরু হচ্ছে
ঢাকা ও চট্রগ্রামের মেট্রোপলিটন এলাকায় টিসিবি’র ট্রাকে করে পণ্য বিক্রয় কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
আন্তর্জাতিক মূদ্রা তহবিলের ( আইএমএফ) পরামর্শে অন্তর্বর্তী সরকার ট্যাক্স ও ভ্যাট বাড়ানোর ফলে টিসিবি বিভিন্ন পণ্যের দাম দাম সংশোধন করার প্রয়োজন পড়েছে। এছাড়া বিগত সরকার আমলে ৪৩ লাখ ভূয়া টিসিবির কার্ড বাতিল করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরা আওতায় সরকারী প্রতিষ্ঠান টিসিবি ঢাকা ও চট্রগ্রামের মেট্রোপলিটন এলাকায় ট্রাকে করে পণ্য বিক্রয় কর্মসূচি শুরু করার প্রস্তাব অর্থনৈতিক সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির মঙ্গলবারের বৈঠককে উঠবে।
এদিকে দেশের মূল্যস্ফীতির এই বাজারে বাড়তি আর্থিক চাপ সামলাতে না পেরে অনেক সুবিধাভোগী আবারও টিসিবির ট্রাক সেল কর্মসূচি চালুর দাবি আসছে।
গত বছর ট্রাক সেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি সংস্থা টিসিবি- এর ট্রাকে করে ভর্তুকি দেওয়া পণ্য বিক্রির নির্ধারিত শিডিউল শেষ হয়ে যায়।
সরকারি এই সংস্থা এর সুবিধাভোগী কার্ডধারী লোকেদের জন্য দেশজুড়ে সারাবছর ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল ও চাল বিক্রি করে থাকে।
যদিও ট্রাকে করে বিক্রি অস্থায়ী একটি উদ্যাগ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, যা মূলত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে।
জানা যায়, গত বছর ২৪ অক্টোবর ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রির কর্মসূচি হাতে নেয় টিসিবি। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড না থাকলেও প্রতিদিন ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২৮ হাজার মানুষ ভর্তুকি মূল্যে ট্রাক সেল থেকে এসব পণ্য কেনার সুযোগ পেতেন।
শুরুতে এ কার্যক্রম ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চালু থাকার কথা থাকলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে হিসেবে জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যায় ট্রাক সেল কার্যক্রম।
তবে এতে জুলাই অভ্যুত্থানের পরে গঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ সুশীল সমাজের সদস্য এবং সংগঠনগুলো প্রতিক্রিয়া জানালেও টিসিবি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই ৩১ ডিসেম্বর থেকে ট্রাক সেল বন্ধ হয়েছে।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, "ফ্যামিলি কার্ডধারী যারা রয়েছেন, তারা কিন্তু সারাবছর পণ্য পান। এর বাইরে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশেষ সময়ে ট্রাক সেল কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, যেন সাধারণ মানুষ ভর্তুকি মূল্যে পণ্য কিনতে পারেন। কর্মসূচীটা আবারো শুরু করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ট্রাক সেল কার্যক্রম কিন্তু সারাবছর চালানো হয় না। যখন মূল্যস্ফীতি বেশি থাকে বা কোনো পণ্যের বিশেষ চাহিদা থাকে, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় টিসিবি ট্রাক সেল কার্যক্রম পরিচালনা করে। তার অংশ হিসেবে অক্টোবরে ২৮ হাজার পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নভেম্বর পর্যন্ত এটা চলমান থাকার কথা থাকলেও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় তা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরীতে ৫০টি ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২০টি ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল ও চাল বিক্রির কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল টিসিবি। এই কার্যক্রমের আওতায়, একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল প্রতিলিটার ১০০ টাকায়, ২ কেজি মসুর ডাল প্রতিকেজি ৬০ টাকায় এবং ৫ কেজি চাল প্রতিকেজি ৩০ টাকায় কিনতে পারতেন।
এদিকে জানুয়ারি মাস থেকে শুধু স্মার্টকার্ডধারী পরিবারকেই পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিসিবি। এক্ষেত্রে এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে শুধুমাত্র ৫৭ লাখ স্মার্ট কার্ডধারী এ সুবিধা পাবেন।
টিসিবির পণ্য কেনার জন্য একটি পরিবারকে এতদিন একটি সাধারণ কাগুজে কার্ড দেওয়া হতো। পুরনো এই কার্ড বাতিল করে এখন স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে পণ্য বিতরণ শুরু করেছে টিসিবি।