নগদের ‘অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি ও পাচারের’ প্রমাণ পাওয়া গেছে: দুদক

নগদের ‘অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি ও পাচারের’ প্রমাণ পাওয়া গেছে: দুদক

মোবাইল ফোনে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ এর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক মানি তৈরি করে বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে পাচার করার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে এমন তথ্য দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

‘নগদ'-এর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রুহুল হকের নেতৃত্বে একটি দল ‘নগদ’ এর প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায়।

এই অভিযান চালানোর তথ্য তুলে ধরে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, নগদ বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করে বেশ কিছু বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। অভিযানের সময় সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘নগদ’ ৬০০ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছে। এছাড়া ট্রাস্ট হিসাবের সঙ্গে ‘নগদ’ এর মূল হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে।

অভিযোগের বিষয়গুলো বিশদভাবে যাচাইয়ের জন্য অভিযানে যাওয়া দুদকের দলটি সংশ্লিষ্ট সকল নথি সংগ্রহ করেছে। এসব নথি পর্যালোচনা করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

দুদক বলছে, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া ৯৭ হাজার হিসাব খোলা হয়েছে।

ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা দিতে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি হিসেবে ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করে নগদ। পরে গত বছর জুনে নগদকে ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন তফসিলি ব্যাংকের তালিকায় যুক্ত করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২১ অগাস্ট নগদ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আগের পর্ষদ ভেঙে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বুধবার দুদকের অভিযানের পর প্রাথমিকভাবে নগদের ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার ও ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি বিষয়ক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন বদিউজ্জামান।

এরপর সেখান থেকে বের হয়ে বিকেলে গুলশানের দিকে যাওয়ার পথে তিনি হামলার শিকার হন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘নগদ’ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত সপ্তাহে করা মামলায় আসামি করা হয়েছে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুকসহ ২৪ জনকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন ‘পেমেন্ট সিস্টেমস’ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আমীর খসরু।

মামলায় বলা হয়, গত বছরের ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে। তাতে বিভিন্ন ব্যাংকের ‘ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট’ হিসাবে ইস্যুকৃত ই-মানির বিপরীতে রিয়েল মানির ১০১ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি পাওয়া যায়।