মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক পর্যালোচনার উদ্যোগ

মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক পর্যালোচনার উদ্যোগ

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর অন্তত ৩০টির বেশি মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অন্তত ১০টি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রায় ২০টি পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছে।

শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার ডাকা বৈঠকে এসব সুপারিশ আলোচনা করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এনবিআর কর্মকর্তাদের প্রস্তুত করা খসড়া সুপারিশ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উত্থাপন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

এনবিআরের পণ্যের তালিকায় আছে— ভাল্ভ, ইলেকট্রিক কিছু পণ্য, মাংস, জেনারেটর ও স্ট্র্যাপ। শুধু আমদানি শুল্ক নয়; ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, অগ্রিম করও পর্যালোচনার প্রস্তাব রয়েছে। তবে কী পরিমাণ শুল্ক-কর কমানো বা নির্ধারণ করা হবে, সেই বিষয়ে কোনো সুপারিশ করা হয়নি।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন পণ্যের ওপর বাংলাদেশে ৭৪ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি সঠিক নয়। বেশিরভাগ পণ্যেই ৫ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক আছে। সামান্য কিছুটা বেশি হারে করারোপ করা হয় কয়েকটি পণ্যে, যেগুলো খুব বেশি আমদানি করা হয় না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য কিছু পণ্যে শুল্ক-কর কমানোর হিসাব কষেছে এনবিআর।

এনবিআরের শুল্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি, গত তিন-চার বছরে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়েছে, তাতে মোট করারোপ করা হয়েছে ৫ শতাংশের কম। এছাড়া টুপিতে ৬০ শতাংশ ট্যারিফ আছে। কিন্তু টুপি তো আমরা আমদানিই করি না। তারপরও আমরা কিছু জিনিস রেডি করেছি। এর মধ্যে রয়েছে জেনারেটর, স্ট্র্যাপ, মাংস— এটা একটা সেনসিটিভ আইটেম, ভাল্ভ ও কিছু ইলেক্ট্রিক পণ্য রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন পাল্টা (রেসিপ্রোক্যাল) করারোপ করেছে, এখানে কর ইস্যু নয়, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোই প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে আমদানি না বাড়ালে যতই শুল্ক-কর কমানো হোক, কোনো কাজে আসবে না। তবে ট্রাম্প প্রশাসনকে আলোচনার টেবিলে আনা এবং তাদেরকে বোঝানোর জন্য আমাদের এই উদ্যোগ নেওয়া।

এখানেই শেষ নয়, আরও কী করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করছে এনবিআর। এ লক্ষ্যে রোববার অভ্যন্তরীণ বৈঠকও করবে সংস্থাটি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা বৈঠকেও অংশ নেবে এনবিআর।