নিপুণকে জেতাতে ফোন করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও

নিপুণকে জেতাতে ফোন করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও

আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের আশীর্বাদপুষ্ট ঢালিউড অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার— অনেকেরই জানা ছিল। চর্চা হতো গোপনে। এবার বিষয়টি এসেছে প্রকাশ্যে। সেইসঙ্গে জড়িয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নাম। জানা গেছে ২০২২ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী করতে শেখ সেলিমের পাশাপাশি আসাদুজ্জামান খান কামালও ফোন করেছিলেন।

২০২২ সালে ভোটারদের ভোটে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান। তবে শেখ সেলিম-আসাদুজ্জামান খান কামাল চাইছিলেন নিপুণই বসুক সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে।

শিল্পী সমিতির সে নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন পিরজাদা হারুন। তাকেই ফোন করেছিলেন আওয়ামী লীগের এই দুই প্রভাবশালী নেতা। সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি।

পিরজাদা হারুন বলেন, ‘২০২২ সালের নির্বাচনে যখন ভোট গণণা করা হচ্ছিল তখন শেখ সেলিম ১৭ থেকে ১৯ বার আমাকে ফোন করেছিলেন। আমার সঙ্গে তার কয়েকবার কথাও হয়েছে। ওই রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামলও আমাকে ফোন করেছিলন। তাদের দুজনের উদ্দেশ্যই ছিল এক।’

পিরজাদা হারুন আরও বলেন, ‘ওই নির্বাচনে তার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, যা তাকে মানসিকভাবে এখনো আতঙ্কিত করে। নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী দেখাতে অনেক ওপর থেকে এক ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ একের পর এক ফোন করতে থাকেন। তিনি সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রায় সব মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রভাব খাটাতেন, নিয়ন্ত্রণ করতেন বলা যায়। কিন্তু আমি সরাসরি ‘না’ বলে দেই।’

আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময় মুঠোফোনে ভয়ও দেখানো হয়, এমনকি বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখানো হয় উল্লেখ করে হারুন বলেন, ‘তখন একের পর এক ফোনে আমাকে ভয় দেখানো হয় যে তুলে নিয়ে যাবে। এখন যে আয়নাঘরের কথা শুনছি, তখন সে রকম কোনো আয়নাঘরের কথা শোনা থাকলে হয়তো সৎ থাকা সম্ভব হতো না। সেই রকম ভয় দেখানো হয়েছিল। পরে একটা জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বড় অঙ্কের টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা করা হলো। সেটা চলে গেল কোর্টে। তখন নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে বানিয়ে দেওয়া হলো অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। নানা কাণ্ডে আমাকে ছোট করা হলো, এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হলো।’

পাঁচবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন হারুন। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু ২০২২ সালের নির্বাচনে তার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, যা তাকে মানসিকভাবে এখনও আতঙ্কিত করে বলে জানান হারুন।

২০২২ সালের নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় মিশা-জায়েদ প্যানেলের। সেসময় ভোটে জেতেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও জায়েদ। কিন্তু ভোট চুরির অভিযোগে জায়েদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন নিপুণ। এরপর আদালতের সিদ্ধান্তে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন নিপুণ।