বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষের একতা: ফারুকী
টানা বৃষ্টি এবং ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেওয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখছে বাংলাদেশ। এতে দেশের ৯ জেলার কয়েক লাখ মানুষের জীবন বিপর্যয়ের মুখে। সামাজিক মাধ্যমে উঠে আসছে আটকে পড়াদের আর্তনাদ; জীবন বাঁচাতে আকুতি জানাচ্ছেন তারা।
এর মধ্যে বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে ফেনী। এই জেলার তিনটি উপজেলার সঙ্গে ইতোমধ্যেই সকল ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেখানে উদ্ধার কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
এমন অবস্থায় সরব রয়েছে দেশের তারকামহল। তারা নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একের পর এক জনসচেতনতামূলক পোস্ট শেয়ার করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। দেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য ছুঁড়ে দিচ্ছেন তিনি; সকলকে এক হয়ে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে ফারুকী লেখেন, ‘মনে করেন আমরা যুদ্ধে আছি। তাহলে কি করতাম? সবাই মিলে ঝাঁপাইয়া পড়তাম। তাহলে চলেন এখনও তাই করি। নৌ সেনা, বিমান বাহিনীর ভাই-বোনেরা, লেটস স্টেপ আপ! রেসকিউ বোট-কার্গো বিমান যা কিছু আছে তা নিয়ে দ্রুত উদ্ধারের গতি বাড়াই চলেন। কথা বলে যা জানলাম, মানুষের এই মুহূর্তে প্রয়োজন রেসকিউ বোট; লাখো মানুষ উদ্ধার করা একটা হারকুলিয়ান টাস্ক। বাট লেটস ডু ইট। দুর্গত এলাকার কাছে-দূরে যেখানে যত স্পিডবোট, ইঞ্জিন নৌকা আছে, সেগুলা নিয়া ঝাঁপাইয়া পড়ি চলেন। কিন্তু লাইফ জ্যাকেট না নিয়ে কেউ যাবেন না দয়া করে।’
এর আগে বুধবার ফারুকী সামাজিক মাধ্যমে ১৯৮৮ সালের বন্যার ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষের একতা। সেই আটাশির বন্যা থেকে দেখে আসছি। বিপদে আমরা একে অন্যের পাশেই থাকি। জুলাই বিপ্লবের আগে এবং পরেও আমরা দেখিয়েছি। লেটস ডু ইট অ্যাগেইন। লেটস ফোকাস অন ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি। লেটস ওয়ার্ক টুগেদার।
এদিকে এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে বন্যায় দেশের ৬ জেলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ফেনীতে পানিতে ডুবে একজন মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত এ পরিস্থিতি নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীর পানি বাড়ছে। এতে মঙ্গলবার থেকে ৬ জেলায় মোট এক লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৩টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৮ জন।