শাকিব-সিয়ামের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ!
ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের ‘তুফান’ সিনেমা গেল ঈদেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। ছবি মুক্তির আগেই প্রকাশ্যে আসে তুফানের একটি পোস্টার। যেখানে এলোমেলো চুলে সিগারেট হাতে দেখা যায় শাকিব খানকে। ভক্তমহলেও নায়কের এমন বিধ্বংসী লুক বেশ প্রশংসিত হয়।
এরপর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা নায়ক সিয়াম আহমেদের ‘জংলি’ সিনেমার পোস্টার প্রকাশ পায়। যেখানেও এই নায়ককে সিগারেট হাতে দেখা যায়। পরপর দুটি সিনেমার পোস্টারে শাকিব ও সিয়ামের এমন ধূমপান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছে ধূমপানবিরোধী একটি সংস্থা। তারা মনে করছে এসব তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় করা হচ্ছে।
সম্প্রতি স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ নামের সংস্থাটি শাকিব খান ও সিয়ামের ধুমপানের পোস্টার প্রকাশ করে লিখেছে, বাংলাদেশের আইনে চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শনে বিধিনিষেধ থাকলেও, তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় অযাচিতভাবে ধূমপানের দৃশ্য ও নায়কের হাতে সিগারেট প্রদর্শন এবং কিশোর-তরুণদের ধূমপানসহ নেশার দিকে ধাবিত করতে অনলাইন মাধ্যমে সেগুলোর ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে।
সিয়াম ও শাকিবের মতো তারকারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিপথগামী করছে বলে মনে করে সংস্থাটি। তাদের ভাষ্য, ‘আইন লঙ্ঘনে জড়িতরা সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। যারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিপথগামী করছে, তাদের বর্জন করুন। একই সঙ্গে আইন লঙ্ঘন করে নির্মিত এসব সিনেমা নিষিদ্ধ এবং আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলুন।’
দর্শকের কাছে সিনেমাকে আকর্ষণীয় করতে বড় ভূমিকা রাখে পোস্টার। তবে সিনেমার এসব পোস্টার তৈরিতে মেনে চলতে হয় কিছু বিধিনিষেধ। অথচ সেসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্মাতা-প্রযোজকরা দেদার ব্যবহার করছেন ধূমপানের দৃশ্য।
সাম্প্রতিক সময়ের বেশিরভাগ সিনেমার ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা গেছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টে পরতে পরতে ধূমপানের দৃশ্য। ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও সিগারেটের ব্যাপক প্রচারণা চলছে বলে মনে করে স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ।
তাদের ভাষ্য, তরুণদের কাছে ‘ওটিটি’ অনেক জনপ্রিয়। ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো ওটিটির মাধ্যমে কিশোর-তরুণদের ধূমপানে উসকানি দিচ্ছে। কিছু নির্মাতা-শিল্পী নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সুকৌশলে ধূমপানের দৃশ্য দেখিয়ে যাচ্ছে। দেশের অগ্রযাত্রা থামাতে তরুণদের নেশাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ধূর্ত তামাক কোম্পানি ও তাদের দোসরদের রুখতে হবে।
সবাইকে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলছে, ‘প্রাণঘাতী তামাকের নেশা থেকে আমাদের সন্তান, ভাই-বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে ওটিটির কনটেন্টে ধূমপান ও মাদক সেবনের দৃশ্যায়ন বন্ধ করুন। নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজে ধূমপানের দৃশ্য বন্ধে সমস্বরে জোরালো আওয়াজ তুলুন।’
২০০৫ সালের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে, বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত, বিদেশে প্রস্তুতকৃত কোনো সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্য চিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মঞ্চ অনুষ্ঠান বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে প্রচার, প্রদর্শন বা বর্ণনা করবেন না বা করাবেন না।
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো সিনেমার কাহিনির প্রয়োজনে অত্যাবশ্যক হলে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য রয়েছে এমন কোনো সিনেমা প্রদর্শনকালে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে লিখিত সতর্কবাণী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, পর্দায় প্রদর্শন-পূর্বক তা প্রদর্শন করা যাবে।