চার্জশিট দাখিল, হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর কারণ জানা গেল

চার্জশিট দাখিল, হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর কারণ জানা গেল

আত্মহত্যাই করেছেন অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। এর পেছনে ছিলেন তার কথিত বয়ফ্রেন্ড মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফি জিয়া (৩৬)। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সাব্বির হোসেন এ চার্জশিট দাখিল করেছেন।

চার্জশিটে বলা হয়, উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। তার বিয়ে হলেও পরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। একই ফ্ল্যাটে থাকতেন মেকআপম্যান ও আর্টিস্ট কবির আহম্মেদ মিহির।

২০১৪ সালে হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে রুফির বিয়ে হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়তার সম্পর্কের জেরে রুফির সঙ্গে হিমুর পরিচয় হয়।

হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে আসামি জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও হিমু ও রুফির মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার ছয় মাস আগে থেকে হিমুর বাসায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। রুফি মাঝে মধ্যে হিমুর বাসায় রাতযাপনও করতেন।

ঘটনার আগের দিন ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর নিহত হিমু মনোমালিন্যের জের ধরে আসামি রুফির মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেন। এ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। রুফি পরদিন ২ নভেম্বর হিমুর বাসা আসে। মিহির বাসার মেইন দরজা খুলে দিলে রুফি হিমুর বাসায় ঢুকে। বাসা প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই মিহিরের রুমে এসে রুফি চিৎকার করে বলেন, ‘হিমু আত্মহত্যা করেছে’।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেয়া নিয়ে হিমুর সঙ্গে রুফি বাসায় আসার পর ঝগড়া হয়। রুফি ভিকটিম হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। এরপর রাগে ও অভিমানে হিমু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, মিহিরের রুমে এসে রুফি আত্মহত্যার কথা জানানোর পর মিহিরের জিজ্ঞাসায় রুফি জানান, তখন তিনি বাথরুমে ছিলেন এবং তখনই হিমু আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মিহির হিমুর রুমে গিয়ে তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। এসময় রুমে থাকা কাচের দুটি গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান মিহির।

চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, হিমু আত্মহত্যার পর মিহির ও আসামি রুফি হিমুকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় মরদেহ হাসপাতালে রেখে হিমুর দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় রুফি। 

২০০৫ সালে ছোটপর্দায় নাম লেখান হিমু। অল্পদিনেই লাভ করেন জনপ্রিয়তা। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘বাড়ি বাড়ি সারি সারি’, ‘হাউজফুল’, ‘গুলশান এভিনিউ’ উল্লেখযোগ্য। চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। এ ছবিতে অরু চরিত্রে দেখা যায় তাকে।