অপরাধ প্রমাণ হলে যে সাজা হতে পারে পরীমণির
ঢাকাই চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। রোববার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত এই আদেশ দেন। এ সময় আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জশিট গঠন করারও আদেশ দেন আদালত।
পরীমণির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হলে নায়িকার কী সাজা হবে সে বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মো. সোহেল।
আইনজীবী সোহেল জানান, চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় চার্জগঠন বা অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতে অপরাধ প্রমাণ হলে নায়িকা সর্বোচ্চ ৩ বছর সাজাপ্রাপ্ত হবেন।
আইনজীবী সোহেল আরও বলেন, ৩২৩ ধারার সেচ্ছায় আঘাত করার বিষয়টি প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১ বছর আর অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন প্রমাণিত করতে পারলে সর্বোচ্চ ২ বছরের সাজা হতে পারে। আদালত চাইলে শাস্তি কমাতে পারেন তবে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তিই চাইব।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বোটক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। সে মামলায় আদালতে নায়িকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সোহেল।
পরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অভিনেত্রী ও তার সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামীদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না।
পরীর বিরুদ্ধে করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর পরী তার সহযোগীদের নিয়ে বোটক্লাবে ঢোকেন। ওই সময় বোটক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম ক্লাব ত্যাগ করছিলেন।
সে সময় পরী উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসির ও আলমকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন।
নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমণি হত্যার হুমকি দিয়ে বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি ৫ দিন পর ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পরীমণি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিন, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪ জনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যদিও সে মামলার তদন্তে ধর্ষণ বা হত্যাচেষ্টার কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।