এক দেশের অনুমতি নিয়ে আরেক দেশে যেতে হচ্ছে, এটা লজ্জার

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ফাইল ছবি

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছিলেন বিএনপি সরকারের মন্ত্রী। এছাড়া বিএনপির কূটনৈতিক টিমেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন লম্বা সময় ধরে। দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, দলের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানা বিষয়ে কথা বলেছেন দ্য মিরর এশিয়ার সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দ্য মিরর এশিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি এইচ এ আসাদ।

দ্য মিরর এশিয়া: শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর এবং চীন সফর কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: একটা দেশের সাথে অন্য দেশের সম্পর্ক শুধুমাত্র রাজনৈতিক হতে পারে না। সেটা হবে পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে। সেটা উন্নয়ন থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, অর্থনীতি, বিনিয়োগ সকল কিছু নিয়ে। এখন একটি দেশের অনুমতি নিয়ে আরেক দেশে যেতে হচ্ছে, এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? তাহলে বাংলাদেশ কোথায় অবস্থান করছে, এটা বড় প্রশ্ন। তাদের টিকে থাকা যদি অন্য দেশের ওপর নির্ভর করে হয়, তাহলে বাংলাদেশের (সার্বভৌমত্ব) কোথায় আছে।

দ্য মিরর এশিয়া: সরকার বলছে দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই ভারত বা চীনের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় কৌশল করছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: কোনো একটি দেশের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নিভর্রশীল হতে পারে না। আমাদের সময়ে (বিএনপি আমলে) প্রবৃদ্ধি ছিল সাত শতাংশের ওপরে। আওয়ামী লীগ এখনো সেখানে নিতে পারেনি। আমাদের সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো সব পজিটিভ ছিল, এখন সবগুলো নিম্নমুখী হয়ে গেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার ক্ষমতাসীনরা (আওয়ামী লীগ) সব কিছু করছে, একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় দেশের পররাষ্ট্রনীতিতেও তার প্রভাব পড়েছে।

দ্য মিরর এশিয়া: আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন আপনরা কি বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন না?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পরিষ্কারভাবে বলে গেছেন, আজও আমরা সেটিই বলি- বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। আজকে বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি, সেটি বিপরীতমুখী। বর্তমানে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে, সরকার বলতে পারছি না তাদের। দেশের মানুষের প্রতি আস্থা নেই। তাদের আস্থা চলে গেছে বিদেশিদের ওপর।

দ্য মিরর এশিয়া: চীন সফর নিয়ে সরকার বেশ আশাবাদী, চীনা বিনিয়োগও বাড়বে। আপনি কী মনে করছেন?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: নতুন বিদেশি বিনিয়োগ দূরের কথা, যারা আগে বিনিয়োগ করেছে, তাদের মুনাফাও দেশে পাঠাতে পারছে না। ব্যাংকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার দিতে পারছে না। বিনিয়োগের যে মানদণ্ডগুলো থাকার কথা, সবগুলো ভেঙে পড়েছে। আর্থিক খাত, জ্বালানি খাত সবগুলো পৃষ্ঠপোষকদের হাতে চলে গেছে। বিদেশিরা আর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আসবে না। তারা প্রথমে দেখবে ব্যবসায় পরিবেশ কেমন, আইন ঠিক আছে কি-না, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে কি-না। দেশীয় দক্ষ কর্মী তৈরি হয়নি বলে বিদেশিদের নিয়ে আসতে হচ্ছে। অনেক ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই বলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কোনো সুরক্ষা থাকবে না। সব কিছু শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সময়ে (বিএনপি আমলে) সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।

এখন অলিগার্করা সব নিয়ন্ত্রণ করছে। বিএনপির সময় শেয়ার মার্কেটে কোনো কেলেঙ্কারি হয়নি। আর্থিক খাতে কোনো কেলেঙ্কারি হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক খাত রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ছিল। সাধারণ মানুষ বিনিয়োগ করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পেয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতির যে নির্দেশকগুলো আছে, সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হয়েছে। তখন বাংলাদেশকে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে বিশ্বের অর্থনীতিতে।

দ্য মিরর এশিয়া: সরকারের দাবি বিভিন্ন সূচকে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি কি এর বিরোধিতা করবেন? 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: অর্থনীতির মানদণ্ডের রেটিং বিদেশিরা নিম্নগামী বলছে, ফিচ রেটিংস কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের রেটিংস যাচ্ছে নিচের দিকে। যেখানে তথ্য, পরিসংখ্যান প্রশ্নবিদ্ধ, তাহলে কীসের ভিত্তিতে মানুষ বিনিয়োগ করবে। যারা মহাদুর্নীতি করছে, সবাই সরকারকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অবদান রেখেছে। দেখবেন, দীর্ঘ মেয়াদে তাদের কোনো শাস্তি হবে না, কারণ তারা আওয়ামী সহযোগী শক্তি। প্রশাসনে দুর্নীতি। এখন যেটা দেখা যাচ্ছে- এটা সমুদ্রের মধ্যে এক বিন্দু পানি। সমস্ত প্রশাসনকে দুর্নীতি গ্রাস করে ফেলেছে। অলিগার্করা এদের প্রটেকশন দিয়ে রেখেছে। এই যে রপ্তানি আয়, গত দশ বছরে তারা ৬৫ বিলিয়ন বেশি দেখিয়েছে। খেলাপি ঋণ এক লক্ষ কোটি টাকার কিছু বেশি দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে এটা চার লক্ষ কোটি টাকার ওপরে। সরকারের কোনো পরিসংখ্যান জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য না।

আজকে অর্থনীতির দিকে তাকান, ৪৮ বিলিয়নের রিজার্ভ কমে ১৩ বিলিয়নের মতো ব্যবহারযোগ্য আছে। ব্যাংকগুলো সব খালি হয়ে গেছে, শেয়ার মার্কেট লুটপাট হয়ে গেছে। লক্ষ লক্ষ ডলার পাচার করে নিয়ে গেছে। ডলারের অভাবে আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, মিল-ফ্যাক্টরিগুলো চালাতে পারছে না গ্যাসের অভাবে, বিদ্যুতের অভাবে। মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। আমদানি নির্ভরতায় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দ্য মিরর এশিয়া: আপনি কি বলতে চাইছেন পুরো সিস্টেমটাই একটি বৃত্তে আটকে গেছে?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: সাধারণ মানুষকে উচ্চ দামে পানি কিনতে হচ্ছে, বিদ্যুৎ বিল দিতে হচ্ছে। এখান থেকে মুক্তির পথ একটাই। জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ। যার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকবে। অলিগার্কের লেজ ধরে যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে, এদের সাথে আছে প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা- এরা সকলে মিলেই এই (লুটপাটের) কাজটা করছে। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে রাজনীতি, কূটনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। একটা রেজিম তৈরি করা হয়েছে, যেখানে রাজনীতিবিদদের কোনো কিছু করার নেই। তারা সম্পূর্ণ বাইরে আছে। জনগণের ভোটই নাই, সত্যিকারের যারা রাজনীতিবিদ তারাও এই ক্ষমতার বলয়ে নেই।

দ্য মিরর এশিয়া: রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির এগুলো নিয়ে কথা বলা উচিৎ। আপনারা কি তা করছেন?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: জনগণ একটা পরিবর্তনের স্বপ্নে আছে। জনগণের শক্তির বিরুদ্ধে ক্ষমতা দখল করে (আওয়ামী লীগ) বসে আছে, যারা বছরের পর বছর গুম-খুন, রাষ্ট্র কাঠামো ব্যবহার করে নিপীড়ন করে এখনো টিকে আছে। এগুলো মাথায় আছে। ঘুঘু বারবার ধান খেয়ে পার পায় না, কিন্তু সময় এলে ঘুঘুকে ফাঁদে পড়তে হবে।

দ্য মিরর এশিয়া: পরিস্থিতি যদি এমনই হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর মানুষের আস্থার সংকট বেড়ে যেতে পারে কি-না?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: বাংলাদেশের মানুষ আজকে দৃঢ়চিত্তে গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে আমাদের সংগ্রামে সমর্থন দিচ্ছে এবং তারা আমাদের সাথে আছে। আমি একদিন অপেক্ষা করতে রাজি না। দেখুন, অনেক সময় রাজনৈতিক দলের চেয়ে মানুষ এগিয়ে থাকে। বাংলাদেশের আজকের প্রেক্ষাপট হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে মুক্তির এই আন্দোলনে জনগণ অনেক এগিয়ে আছে, সে আন্দোলন বিফল হতে পারে না। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে কেমন আন্দোলন হবে, সেটা জনগণের মাথায় আছে, বিএনপিরও মাথায় আছে। নিশ্চয়ই মাথায় থাকবে। আর ক্ষমতাসীনরা গুলি করে, টিয়ার গ্যাস মেরে জনগণের সমর্থনকে বাধা দিতে চায়। রাষ্ট্রকাঠামো ব্যবহার করে বারবার জনগণকে প্রতিরোধ করা যায় না। একটা সময় ক্ষমতাসীনরা মনোবল হারিয়ে ফেলবে। বিপরীতে জনগণের সমর্থন আরো শক্তিশালী হয়েছে।

দ্য মিরর এশিয়া: বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলনে অনেক নেতাকর্মীই সর্বশান্ত হয়ে গেছে, তাদেরকে কি আগামীর ধারাবাহিক আন্দোলনে পাবেন?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: নির্বাচনের আগে যে আন্দোলন, আজকের আন্দোলন তার চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী। বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে। এদেরকে নিয়েই আমাদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনটা হচ্ছে একটা রেজিমের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন, এই আন্দোলন বিফলে যেতে পারে না। দেখুন, পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে যোগ দিয়েছে। বিএনপি যেভাবে মাঠ থাকে কেন্দ্রে জনগণের সমর্থনে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়েছে; মানুষ বাসের ছাদে, হেঁটে, সাইকেলে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিয়েছে। স্বাধীনতার সময় ও পরবর্তীকালে মানুষের এমন সমর্থন কোনো দল পেয়েছে কি-না আমার জানা নেই। মানুষ আর অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চাই। আপনি দেখেন সবাইকে জেলে নিয়ে গেছে, কিন্তু জনগণ ভোট কেন্দ্রে যায়নি, এটা বিএনপির সফলতা হিসেবে দেখতে হবে। ২০ লক্ষ লোকের একটা জনসমাগম হলো; গুলি করে, টিয়ারশেল মেরে তারা বন্ধ করে দিয়েছে। একটা ডামি নির্বাচন করে, ক্ষমতা দখল করে, জনগণকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে রেখেছে। এটার কারণে যদি কেউ ভাবে আন্দোলন দুর্বল হয়ে গেছে, তাহলে সেটা ভুল ধারণা। বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে।

দ্য মিরর এশিয়া: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের যে অবস্থা, আপনারা আন্দোলন করে তাকেও মুক্ত করতে পারলেন না?

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। মুক্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী তিনি গণতন্ত্রের নক্ষত্র হয়েছেন। আজও তার নাম লেখা রয়েছে স্বর্ণাক্ষরে। খালেদা জিয়া তেমনই একজন নেত্রী, নেলসন ম্যান্ডেলাকে দেখিনি আমরা, কিন্তু খালেদা জিয়াকে আমরা দেখেছি। খালেদা জিয়ার নাম বিশ্বের গণতান্ত্রিক মুক্তির আন্দোলনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশেও সফলতা আসবে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো। আন্দোলন চলছে, চলবে; যতক্ষণ না গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি না হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় যেরকম অপশক্তি ছিল, বাংলাদেশেও খালেদা জিয়াকে আটক রেখে এরা একের পর এক প্রহসনের নির্বাচন করেছে, জনগণের ভোট কেড়ে নিয়েছে, মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। সাংবিধানিকভাবে রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

দ্য মিরর এশিয়া: কিন্তু আপনাদের আন্দোলনে সে রকম কোনো গতি দেখা যাচ্ছে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: মিডিয়া ফাইট ফর এ কজ (মিডিয়া একটা কারণে যুদ্ধ করে যাচ্ছে)। দেশের মানুষ তাদের ফ্রিডম (মুক্তির) জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত আছে। ত্যাগ না থাকলেও তো আমাদের ৬০ লক্ষ মানুষ মিথ্যা মামলায় আসামি হতো না। হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম হয়েছে, জেল হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে, চাকরি হারিয়েছে, ব্যবসা হারিয়েছে, পথে পথে হাঁটছে, বাড়ি-ঘরে থাকতে পারছে না। কেউ কিন্তু পিছিয়ে থাকছে না। ত্যাগের কোনো ক্ষয় নেই, যে আন্দোলনে মানুষ ত্যাগ করতে রাজি, সে আন্দোলন কখনো বিফলে যায় না।

দ্য মিরর এশিয়া: আপনাকে ধন্যবাদ।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: দ্য মিরর এশিয়াকেও ধন্যবাদ।