নোয়াব সভাপতি একে আজাদকে ডেকেছেন আপিল বিভাগ
সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর মালিক পক্ষ দেবেন না সাংবাদিকরা দেবেন, এ বিষয়ে নিউজ পেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি একে আজাদকে ডেকেছেন আপিল বিভাগ।
আগামী ৪ আগস্ট একে আজাদকে উপস্থিত থেকে বা তার আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনা পৃথক লিভ টু আপিল শুনানিতে নোয়াব সভাপতি বক্তব্য শুনবেন বলে আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. সালাহউদ্দিন দোলন। বাসসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সমীরণ মল্লিক। অপর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাধন কুমার বনিক।
এর আগে রবিবার আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. সালাহউদ্দিন দোলন।
তিনি শুনানিতে বলেন, সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিক পক্ষ এযাবৎ কাল দিয়ে এসেছেন। সর্বশেষ নবম ওয়াজ বোর্ডও এটি প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিকপক্ষ দেবেন এ সুপারিশ করেছেন।
নবম ওয়েজ বোর্ডের প্রজ্ঞাপণে দেখা যায়, মন্ত্রীসভার একটি সাব-কমিটি সংবাদপত্র সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের দিতে সুপারিশ করেন।
এ সুপারিশের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সুপারিশ বাতিল করে রায় দেয়। বিষয়টি নিয়ে এর আগে আপিল বিভাগের রায় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের সংক্ষুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
ব্যারিস্টার ড. সালাহউদ্দিন দোলন বলেন, সাংবাদিকদের আয়কর সাংবাদিকরাই প্রদান করে থাকেন। প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার অনুকূলে সাংবাদিক ও প্রেস শ্রমিকদের যে আয়কর হয় তা প্রান্তিক সুবিধা বা প্রিঞ্জ বেনিফিট হিসেবে প্রদান করেন মালিকপক্ষ বা কর্তৃপক্ষ। এটি অষ্টম ওয়েজবোর্ড পর্যন্ত বহাল ছিল। নবম ওয়েজবোর্ডও তা বহাল রেখে সুপারিশ করে।
রিট আবেদনের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ শুনানিতে বলেন, সকল অংশীজনের সাথে আলোচনা করেই নবম ওয়েজ বোর্ড সুপারিশ করেছেন। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিকপক্ষ দেবেন এর পক্ষে তিনি আইনি রেফারেন্স উল্লেখ করেন।
গত বছরের ২৪ জুলাই সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের নবম ওয়েজবোর্ডে গ্র্যাচুইটি ও আয়কর সংক্রান্ত মন্ত্রীসভার সুপারিশ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান (জামান)। রিট পিটিশনার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ।
সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের আয়কর ও আনুতোষিক সংক্রান্ত দুটি সুপারিশের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ফলে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই মালিক বা কর্তৃপক্ষকেই পরিশোধ করতে হবে। পরে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষে পৃথক আবেদন দাখিল করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। এ বোর্ড অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা-পরামর্শের পর ‘নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ’ চূড়ান্ত করে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তা তথ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করে। ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করে সরকার।