১০০ কিলোমিটার হেঁটে সিকিম থেকে বাঘ গেল ভুটানে
বাঘমামার মতিগতি বোঝা সত্যিই বড়ই দুষ্কর। তবে এবার যে ডোরাকাটা বাঘের কথা জানা গেছে তা রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। ট্র্যাপ ক্যামেরার ছবি দেখে বন দপ্তরের কর্মকর্তাদের ধারণা এই বাঘটিকেই আগে দেখা গিয়েছিল সিকিমের পাঙ্গোলাখার জঙ্গলে। আর সেই বাঘকেই এবার দেখা গেছে ভুটানের সামতসে জেলায়। এখানেই প্রশ্ন বাঘটি এই ১০০ কিমি পথ এল কীভাবে?
তাছাড়া মাঝে পড়ে নদী। সেই নদীও পেরিয়ে গেছে বাঘ। সব মিলিয়ে বাঘের এই দীর্ঘ পথ অতিক্রমকে ঘিরে আলোচনা ইতিমধ্যে অনেকের নজর কেড়েছে।
১১ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ভুটানে একটা আন্তর্জাতিক সেমিনার হয়েছিল। সেখানেই বাঘের এই ভ্রমণবৃত্তান্তের কথা সামনে আসে।
সেই সময় সিকিম ও ভুটানের ফরেস্ট অফিসাররা ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবি পরস্পরের মধ্যে শেয়ার করেন। এরপর যে বাঘের ছবি দেখা যায় তাতে তারা অনেকটাই বুঝতে পারেন যে সিকিম আর ভুটানের বাঘটি একই। কারণ বাঘটির শরীরের নিচের দিকে যে ডোরাকাটা দাগ দেখা গিয়েছিল সেটা দেখেই তারা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যান যে এই বাঘটি একই বাঘ।
এদিকে পাঙ্গোলাখাতে ট্র্যাপ ক্যামেরায় যে ছবিটি দেখা গিয়েছিল সেটা ফেব্রুয়ারি মাসে ধরা পড়েছিল। আর সামতসিতে যে ছবি ধরা পড়েছে সেটা এপ্রিল মাসে। দুই জায়গার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। জঙ্গলের মধ্য়ে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় চলে এসেছে বাঘ।
এটা বোঝা গেছে যে পাঙ্গোলাখা অভয়ারণ্য থেকে ভুটানের সামতসে জেলার জঙ্গল পর্যন্ত বাঘের আনাগোনা রয়েছে। ভারত ও ভুটানের মধ্যে রয়াল বেঙ্গল টাইগারের যে করিডোর যে রয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। সাউথ এশিয়া ওয়াইল্ড লাইফ এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক আয়োজিত কাউন্টারিং ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাফিকিং বিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালার আলোচনায় এই করিডরের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে।
পাহাড়ের অনেকটা উঁচুতে রয়েছে এই বাঘের ডেরা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উত্তর সিকিমের পাকিয়ং জেলায় পাঙ্গোলাখা অভয়ারণ্যের উচ্চতা প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ ফুট ।সেখানেও দেখা মিলেছে বাঘের।
তবে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সিকিম থেকে বাঘ চলে গেল ভুটানে। আর সেটাও প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে। এর আগে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অন্তত তিনটি বাঘের গতিবিধি সম্পর্কে জানা গেছে ট্র্যাপ ক্যামেরায়। তবে এবার বোঝা গেল ১০০ কিলোমিটার হেঁটে ভারত থেকে ভুটানে যাচ্ছে বাঘ।