কোটা সংস্কার হোক আমিও চাই
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠকে কথা তুলেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব ধরনের কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন মোজাম্মেল হক।
দ্য মিরর এশিয়ার সঙ্গে একান্ত আলাপে এসব কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।
এত যচাই বাছাইয়ের পরেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কী করে রয়ে গেল, এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘ভুল সবারই হতে পারে। আমাদেরও হয়তো কিছু ভুল-ত্রুটি রয়ে গেছে। দেশের সবগুলো থানা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভুয়া সনদ যাতে কেউ বানাতে না পারে সে জন্য কোড নম্বরসহ সনদ দেওয়া হচ্ছে।’
মাঝেমধ্যেই সরকারের তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্তির কথা শোনা যায়। এমনটি হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল মন্ত্রীর কাছে। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদেরও দায় দিয়েছেন সরকারের এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারাই ভুল লোককে সনাক্ত করে তালিকাভুক্ত করে দেয়। এগুলোও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
নির্ভুল মুক্তিযোদ্ধার তালিকা না করে সব ধরনের সুবিধা বণ্টন করা হলে একদিকে যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট করা হচ্ছে, অপরদিকে আবার সুযোগ সন্ধানীরা ঢুকে পড়ছে। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে কি-না, মন্ত্রী সাফ জানালেন, ‘কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। আমাদেরও ভুল আছে। আমি নিজেও চাই কোটা সংস্কার হোক একইসঙ্গে প্রকৃত মুুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করার কাজ মন্ত্রণালয় করে যাচ্ছে।’
কোট সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক, এই প্রশ্নে মন্ত্রী বললেন, এটার অবশ্যই যুক্তি আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবেও মনে করছি কোটা সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। আদালতও আন্দোলনকারীদের দাবির পক্ষে মত দিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে আমিও উপস্থাপন করেছি। একটু অপেক্ষা করতেই হবে।
সম্প্রতি বগুড়ার একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে পাঁচজনকে পালিত সন্তান দেখিয়ে সরকারি চাকরি দিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি অবশ্যই লজ্জার। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরকম যারা মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল-জালিয়াতির সাথে জড়িত সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। আর ভুয়া সনদ সবগুলোই বাতিল হবে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।’