মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ইলিশ সংকট, বিপাকে জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। জেলেরা হতাশ হয়ে ফিরছেন নদী থেকে। তাদের অধিকাংশই ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জেলেরা জানান, ইলিশের আশায় তারা নদীতে গেলেও তাদের খরচের টাকা উঠছে না। উপরন্তু, বাড়ছে এনজিও ও মহাজনের ঋণের বোঝা। এছাড়া এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নদীর পানি আরেকটু বাড়লে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ইলিশ আহরণ করা হলেও এবার ভরা বর্ষায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে তা দিয়ে ট্রলারের ইঞ্জিনের তেলের দামসহ অন্যন্য খরচও উঠে না।
ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা ও তুলাতুলি মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আড়তদারদের মাছের বাক্সগুলো খাঁ খাঁ করছে। জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় ঘাটের এখন এমন অবস্থা। জেলেদের পাশপাশি আড়তদাররাও রয়েছেন বিপাকে।
মাছের আড়তদাররা জানান, জেলেসহ তারাও বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন। নদীতে ইলিশের সংকট থাকায় তারাও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন।
তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, নদীতে পানির পরিমাণ আরও একটু বাড়লে দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের। গত বছর ভোলায় ইলিশ আহরণ হয়েছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টনের বেশি। আর এ বছর ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮৫ হাজার টন।
তবে সরকারি হিসাবে জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজারের ও অধিক। এদিকে গুটিকয়েক ইলিশ পাওয়া গেলেও দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এক কেজি ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে সাত থেকে আট হাজার টাকায়।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘ইলিশের মৌসুম শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কিন্তু নদীতে দেখা দিয়েছে ইলিশ সংকট। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। এছাড়া মেঘনা নদীতে অনেক ডুবোচর থাকার কারণে ইলিশ নদীতে কম পাওয়া যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে নদীতে পানির পরিমাণ আরও একটু বাড়লে ইলিশ পাওয়া যাবে।’