জাবি'তে ভয়াবহ তাণ্ডবের অভিজ্ঞতা হল
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চারদিক থেকে অস্ত্রশস্ত্র সহ সন্ত্রাসীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে শুনে উদ্ধার করার জন্য কয়েকজন শিক্ষক সেখানে যাই। প্রশাসনপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করার বিষয়ে আলাপকালে হঠাৎ ভিসি ভবনের মূল ফটক ভেঙে পুলিশের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে ভিসির স্টোর রুমে অন্ধকারে ১০-১২ জন শিক্ষক আশ্রয় নেই। কিছুক্ষণ পরেই সন্ত্রাসীরা রুম ভেঙে গালাগালি ও আঘাত করা শুরু করে। এক পর্যায়ে আমি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লে বের হতে পারিনি । আমার সাথের অন্যরা বের হয়ে গেলেও আমি ও একজন শিক্ষার্থী ঐ রুম থেকে বের হতে পারেনি।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই সন্ত্রাসীদের আরেকটি গ্রুপ এসে আক্রমণ করল ছেলেটিকে। আমি হাত দিয়ে জড়িয়ে রাখলেও তাকে আঘাতের পর আঘাত করল। আমার জামা রক্তাক্ত হয়ে যায় তার রক্তে । এক পর্যায়ে সিকিউরিটি অফিসার সজল এসে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে নিচে আসে। এরপর শুরু হয় পুলিশের তাণ্ডব। আমার সহকর্মী এলাহী, মাফরুহী , রাব্বানীসহ কয়েজন শিক্ষার্থী ও আমি একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়েছিলাম । ঠিক এ সময়ে পাশে থেকে এলাহী বলে আমার গুলি লেগেছে। টিয়ার্সেলের আঘাতে আমি আবার অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ অবস্থায় সম্মিলিত সংস্কৃতি জোটের সভাপতি স্মরণ ও বাংলা ট্রিবিউনের তাওহীদ আমাকে বাসায় পৌঁছে দেয়।
উপাচার্য ভবনে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এরকম অনিরাপদ হতে পারে, আজকের অভিজ্ঞতা না হলে চিন্তাও করতে পারতাম না।
লেখক: অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়।