ভীত-ক্লান্ত পুলিশ, বঙ্গভবনে জরুরি বৈঠকে কর্মকর্তারা

কোটা আন্দোলনের জেরে রাজধানী ঢাকায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শহরের অধিকাংশ জায়গা বিক্ষোভকারীদের দখলে। এ অবস্থায় সারাদিন চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। 

সূত্র বলছে, গত কয়দিনের বিক্ষোভ দমাতে অনেক পুলিশ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। তারা ক্লান্ত। এ অবস্থায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা হচ্ছে। বিষয়টি অবহিত করতে বঙ্গভবনে যাচ্ছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা।

সূত্রটি বলছে, সারাদিন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ গুলি করে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে হতাহত করেছে। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ অবস্থায় পুলিশ অনেকটা মনোবল হারিয়ে ফেলেছে। সেই সঙ্গে তারা উদ্যম হারিয়ে ফেলেছে। 

বিষয়টি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মাদ সাহাবুদ্দিনকে অবহিত করতে বিকেলে সময় চাওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির দেওয়া সময় অনুযায়ী সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করবেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

জানা গেছে, পুলিশ প্রধান চৌধুরি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের আরো কিছু কর্মকর্তা বৈঠকে অংশ নেবেন। 

এদিকে, সন্ধ্যা নাগাদ রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে পুলিশ। গা ঢাকা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পেন সফর বাতিল হতে পারে বলে জানা গেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলমান ছাত্র আন্দোলনে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। এদের মধ্যে অনেকের বয়সই ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এ আন্দোলন দমাতে পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি-এপিবিএন-আনসার যৌথভাবে হামলা চালায়। তাদের সঙ্গে কোথাও কোথাও ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অংশ নিতে দেখা গেছে। তবে দুপুরের পর থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায়। 

এরপর পুলিশ অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশ হঠাৎ করে এসে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে সটকে পড়ছে। পুলিশের এই হামলায় সারাদেশে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্তন অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে। 

এদিকে বুধবার মধ্যরাত থেকেই বন্ধ রয়েছে সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ। এই অবস্থায় হতাহাতের প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।