সাঈদ খানকে গ্রেফতার: বিএফইউজে ও ডিইউজে'র কড়া বিবৃতি 

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি সাঈদ খানকে গত রাত ১ টার দিকে তাঁর মগবাজারের বাসা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তুলে নিয়ে গেছে। সারা রাত ধরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে অবশেষে কাফরুল থানায় মেট্রোরেল পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে  ৫দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। 

সাংবাদিক সাঈদ খানকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে।

বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ওমহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে সাংবাদিক সাঈদ খানের মুক্তি দাবি করে বলেন, এ গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সরকার মুক্ত সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করতে আরও একটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। 

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাঈদ খান একজন মেধাবী সাংবাদিক। তিনি সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারীদের উপর সরকারের বল প্রয়োগ ও নির্বিচারে গণহত্যার খবর অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পরিবেশন করে আসছিলেন দ্য মিরর এশিয়ায়। একই সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়ন নেতা হিসেবে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। এতে ক্ষুব্দ হয়ে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে গভীর রাতে তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং রাতভর তাঁর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।যা বরদাশত করার মতো নয়।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন,বর্তমানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চেহারা কী বীভৎস রূপ ধারণ করেছে সাংবাদিক নির্যাতন ও গণহত্যার মধ্য দিয়ে তা ফুটে উঠেছে। সরকারি বাহিনীর হাতে  মাত্র একসপ্তাহে চার সাংবাদিক হত্যা এবং দুই শতাধিক সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনার বিচার না করে প্রতিবাদী সাংবাদিক নেতা সাঈদ খানকে গ্রেফতার সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের একটি কু-নজির। কথায় কথায় বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের খুন, গুম, বিনা বিচারে হত্যা ও  আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে হত্যা, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, বল প্রয়োগ করে প্রতিবাদী কন্ঠকে স্তব্দ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে সরকার দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সরকারের প্রতিহিংসা থেকে সাংবাদিকরাও রেজাই পাচ্ছে না। এ সরকারের আমলে ৬৬ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শত শত সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিককে প্রাণ বাঁচাতে দেশান্তরি হতে হয়েছে। সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে এখন গণমাধ্যমে ততটুকু স্বাধীনতা আছে যতটা সরকারের পক্ষে যায়।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিক সাঈদ খানকে গ্রেফতার এবং বানোয়াট মামলায় রিমান্ডে নেয়ার মাধ্যমে সরকারের সমালোচক, প্রতিবাদী কলামিস্ট, বিবেকবান লেখক-বুদ্ধিজীবীদের বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার এক অশুভ বার্তা জানান দিলো। সরকার কেবল বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরই নয়, তারা এখন টার্গেট করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে।অন্তহীন ক্ষমতালিপ্সার জন্য এরা প্রতিবাদী সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাই প্রতিবাদী সাংবাদিক, নির্ভিক লেখক ও অকুতোভয় গণতন্ত্রকামী বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের খেলায় মাতোয়ারা হয়ে গেছে। আমরা সরকারকে এই ভয়ঙ্কর খেলা বন্ধ করার আহবান জানাচ্ছি।