‘সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া কোনো উপায় নেই’

‘সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া কোনো উপায় নেই’

বর্তমান যে সংবিধান আছে সেটা সংশোধন করে কোনো লাভ হবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ। তার মতে সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া কোনো উপায় নেই।

শনিবার (৩১ আগস্ট) ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্যে সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

আলী রিয়াজ বলেন, সংবিধানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এটি পুনর্লিখন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। যদি কোনো দল নির্বাচনে ৩০০ আসনও পায় তারাও এই সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না।

সংবিধান সংশোধন কোনো কাজে আসবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এটি পুনর্লিখন ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে ‘ক’ ধারায় এমন কিছু জিনিস আনা হয়েছে যেটি সংশোধন করার কোনো উপায় নেই।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, সাংবিধানিকভাবে একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর হাতে অভাবনীয় ক্ষমতা। নির্বাচনী সার্চ কমিটি অস্বচ্ছ ছিল। শেখ হাসিনা নিজের লোকদের কমিশনে বসিয়েছেন।

আলী রীয়াজ বলেন, ঐক্যমতের জায়গাকে গণতন্ত্র মনে করি না। সহনশীলভাবে মত প্রকাশ এবং মত প্রকাশে সংখ্যালঘুর নিশ্চয়তা বিধানই হচ্ছে গণতন্ত্র। আমাদের সেই গণতন্ত্র পুনর্গঠন করতে হবে। তাই সংবিধানে হাত দেওয়া ছাড়া আমি আর কোনো পথ দেখতে পাচ্ছি না।

আদালতকে ব্যবহার করে আর কোনো অবৈধ রায় দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজুল আলম বলেন, জনগণের বৃহত্তর অংশ কী চাচ্ছে সেটা গুরুত্ব দিতে হবে। যে ত্যাগের মাধ্যমে বর্তমান দেশ আমরা পেয়েছি, সংবিধানে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। একাত্তরের আকাঙ্ক্ষা বাদ দেওয়া হলে সংবিধান পুনর্লিখন আত্মঘাতী হবে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মঞ্জুর হাসান বলেন, মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই। এতে অনেক বিতর্ক এড়ানো যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বোরহান উদ্দিন খান বলেন, সংবিধান সংশোধন করতে পারে সংসদ। সংবিধানের অষ্টম সংশোধনের সময় আমরা ভুল করেছি। সংবিধান পূনর্লিখন চাইলেই করা যায় না।

অনুষ্ঠঅনে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার সারা হোসেন।