পরিবারের নামে পূর্বাচলের ৬০ কাঠা জমি গোপনে বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা

পরিবারের নামে পূর্বাচলের ৬০ কাঠা জমি গোপনে বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচলে সংরক্ষিত প্লট থেকে ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দ নিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা নেওয়া হয়েছে নিজ পরিবারের নামে। এছাড়া দলীয় নেতারা নিয়েছেন আরও ১৪৯টি প্লট।

শেখ হাসিনা পরিবারের নামে নেওয়া প্লটের মধ্যে শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহেনা ও তার দুই ছেলে মেয়েসহ মোট ৬ জনের নামে ১০ কাঠা করে এ প্লট বরাদ্দ পান।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তখন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ছিলেন আনিসুর রহমান। 

প্লট বরাদ্দের পুরো কাজটি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে করা হয় বলে জানা গেছে।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, এই বরাদ্দ অতি গোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করে ২০২২ সালে প্লটগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ৬০ কাঠা জমির এই হাত বদল রাজউকের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া কেউ কিছু জানতেন না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার নামে প্লটের বরাদ্দ পত্র ইস্যু করে রাজউক। পরে সেটি শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনের ঠিকানায় পাঠানো হয়।

জমি বরাদ্দের নথি থেকে জানা গেছে, কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা হিসেবে ১০ কাঠা প্লটের মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরিফ। 

সূত্র মতে, পূর্বাচলে প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে শেখ হাসিনার প্লট নম্বর ০০৯। এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের বরাদ্দ করা প্লট নম্বর ০১৫, সায়মা ওয়াজেদ পতুলের নামে বরাদ্দ করা প্লট নম্বর ০১৭। তাদের নামে যে বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়েছে সেখানে স্বাক্ষর আছে রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার সে সময়ের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমানের। এছাড়া সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহেনার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলের প্লট নম্বর ০১১, তার মেয়ের নামে বরাদ্দ হওয়া প্লট নম্বর ০১৯।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে রাজউকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এ সংক্রান্ত নথি গোপনে সরিয়ে ফেলা হয়। বিষয়টি জানতে পারেন রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের মুখে পরে নথিগুলো আবার রেকর্ড রুমে রাখা হয়েছে। 

এছাড়াও রাজউকের সংরক্ষিত প্লট এ ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের পর্যন্ত ২৮৫ জনকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৯টি প্লটই পেয়েছেন শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, উচ্চ পর্যায়ের আমলা, ছাত্রলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।