হাছান মাহমুদ কোথায়?

ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বেলজিয়ামের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করেছে চট্টগ্রামভিত্তিক একটি গণমাধ্যম এবং একটি জাতীয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল।

হাছান মাহমুদ দেশে ফেরার আগে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বেলজিয়াম শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ভাইও বেলজিয়ামে থাকেন।

এক সময় তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হাছান মাহমুদ গত ৩১ আগস্ট চট্টগ্রামভিত্তিক দুটি গণমাধ্যম সি-প্লাস টিভি এবং চাটগা নিউজের প্রধান সম্পাদক আলমগীর অপুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আলমগীর দাবি করেন, ৩১ আগস্ট রাত ১০টা ২৭ মিনিটে হাছান মাহমুদের একটি ফোনকল পান তিনি।

এদিকে, শুক্রবার ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, হাসান এখন বেলজিয়ামে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথাও বলছেন বলে জানায় বেসরকারি টেলিভিশনটি।

অন্যদিকে, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় দিনের মাথায় গত ২ সেপ্টেম্বর হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

গত ৬ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছানকে আটক করা হয় বলে কয়েকটি টিভি চ্যানেল খবর প্রকাশ করে, তবে সেটিকে অনেকেই গুজব হিসেবেই দেখছেন।

ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাছান ঢাকা থেকে সরাসরি বেলজিয়াম যাননি। তিনি গত ২৬ আগস্ট এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে দুবাই হয়ে জার্মানির ডুসেলডর্ফ বিমানবন্দরে যান।

সেখান থেকে তাকে সড়কপথে বেলজিয়াম পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগের জার্মান শাখার সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী ভূঁইয়া বকুল।

আলমগীর অপুকে উদ্বৃত করে টিভি চ্যানেলটি জানায়, ৩১ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি (হাছান) আমাকে ফোন করে। তিনি হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং বুঝতে পেরে আমাকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

টেলিফোনে আলাপকালে আলমগীর অপু বলেন, কিছু সময়ের জন্য সি-প্লাসের সম্প্রচার বন্ধ রাখার জন্য তিনি (হাসান) দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের হিসাব জব্দের জন্য সব ব্যাংকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ জন সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ ২৬ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঢাকার একটি আদালত।

এই ২৬ জনের মধ্যে ৯ জন সাবেক মন্ত্রী হলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রী ফরিদুল হক খান, হাসানুল হক ইনু (তথ্য), বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।