হত্যা মামলায় তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গ্রেফতার নয়: পুলিশ সদর দফতর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া হত্যা ও অন্যান্য মামলায় আসামিদের নিয়ে ভাবনায় পড়েছে পুলিশ। গণহারে আসামি করায় এসব মামলা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ার পর পুলিশ সদর দফতর বলছে, প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হবে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দফতর থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি তৈরি করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান সই করা চিঠিটি সারা দেশের প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফ্যাক্স করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতর থেকে চিঠির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারীদের পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না।
জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান-কেন্দ্রিক দায়ের করা হত্যা ও অন্যান্য মামলায় তদন্তের আগে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘর্ষ–সংঘাতে নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তা ও সারা দেশের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নামে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এসব মামলার অধিকাংশই হত্যা বা হত্যাচেষ্টার মামলা।
এসব মামলার আসামির তালিকায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ অনেক সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।
পাশাপাশি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় অভিযোগ, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালান। গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে মারা যান।