ছাত্রদের ওপর একে-৪৭ দিয়ে গুলি চালানো ‘চট্টগ্রামের বাদশা’ গ্রেফতার

ছাত্রদের ওপর একে-৪৭ দিয়ে গুলি চালানো ‘চট্টগ্রামের বাদশা’ গ্রেফতার

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো যুবলীগকর্মী সোলায়মান বাদশাকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শরীফ-উল-আলম। এর আগে, একইদিন ভোরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত সোলায়মান বাদশা ঐ গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানার আল-ফালাহ গলিতে। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাবেক এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

র‍্যাব জানিয়েছে, গত ৪ আগস্ট কোতোয়ালি থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোঁড়েন সোলায়মান বাদশা। এছাড়া চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমরান হোসেনের মাথায় কোপ দেন তিনি। ইমরান কৌশলে তা প্রতিহত করলে তার বাম হাতের দুটি আঙ্গুল হাড়সহ আংশিক কেটে গুরুতর রক্তাক্ত যখম হয় এবং অপর একটি কোপ তার তলপেটে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। এ ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর ইমরানের বাবা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা শরীফ-উল-আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই গ্রামে র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানে সোলায়মান বাদশাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি উক্ত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে স্বীকার করেন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ সব অপকর্মের হোতা সোলায়মান বাদশা। নগরের দুই নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন মোড় পর্যন্ত তার অপরাধের অভয়ারণ্য। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাছিম উদ্দিন সোহেল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি।

দুই নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত সোলায়মান বাদশার নেতৃত্বে চলতো টেম্পো থেকে চাঁদাবাজি। ফিনলে স্কয়ার, চিটাগং শপিং কমপ্লেক্স, বিপ্লব উদ্যান হয়ে দুই নম্বর গেট কর্ণফুলী কাঁচাবাজার পর্যন্ত প্রায় দুইশ’ ভাসমান ভ্যানগাড়ি বসিয়ে অনুসারীদের দিয়ে নিয়মিত চাঁদা উঠাতেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত সরকারের আমলে দুই নম্বর গেট, ষোলশহর রেলস্টেশন, তুলাতুলি, সিগনাল এলাকা, আল-ফালাহ গলি, মেয়র গলিসহ আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখল-বেদখল, অপহরণ, অবৈধ গেস্ট হাউজ, অস্ত্র ব্যবসা, ভাড়াটে খুনসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে বেড়াতো সোলায়মান বাদশার গ্রুপের সদস্যরা।