ডিবি হারুন কি এখন যুক্তরাষ্ট্রে?
গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদকে নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি এখনও গ্রেফতার হননি, যদিও বিক্ষোভ দমনে গুলি ছোঁড়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্য তার নাম বিশেষভাবে আলোচিত। সূত্র বলছে— সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে তিনি পুলিশ ও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
হারুন অর রশিদের স্ত্রী ২০০৬ সালে ডিভি লটারি পেয়ে মার্কিন নাগরিকত্ব পান। এই সূত্রে তারা নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত করতেন। গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির সহায়তায় তিনি গোপনে সেখানে অবস্থান করছেন।
৫ আগস্টের ঘটনায় হারুন অর রশিদ দুপুর আড়াইটার দিকে জনতাকে গণভবনে ঢুকতে দেখে ধপাস করে চেয়ারে বসে পড়েন। এর আগে, পুলিশ সদর দপ্তরের একটি কমান্ড ইউনিটে তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছিলেন। ছাত্র-জনতার ঢল বাড়তে থাকলে তিনি ওয়াকিটকিতে নিরাপত্তা সদস্যদের অ্যাকশনে যেতে বলেন, কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকার পতনের পর অন্তত ১৮৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের অনুপস্থিতির কারণে বরখাস্তের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
২০১১ সালে জয়নাল আবেদীন ফারুককে মারধরের ঘটনার পর আলোচনায় আসেন হারুন অর রশিদ। এরপর বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে তার নাম উঠে আসে, যেমন—বিরোধী দলের আন্দোলনে 'বোমা উদ্ধারের' প্রহসন, নির্যাতন, এবং অর্থ আদায়।
৫ আগস্টের ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, হারুন অর রশিদ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সেদিনই শেষ হবে। জনতার ঢল গণভবনে ঢুকে পড়লে তিনি আত্মরক্ষার জন্য দেওয়াল টপকাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে এক বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার অবস্থান নিয়ে জনমনে কৌতূহল তৈরি হয়।
হারুনের স্ত্রী আমেরিকার ভিসা থাকার কারণে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু মার্কিন দূতাবাস তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পুলিশ বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল বাহিনীর (সোয়াট) গাড়িতে তাকে একটি মিরপুরের জায়গায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে জনতা তাকে চিনে ফেলে এবং মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হারুন অর রশিদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই, কিন্তু বিভিন্ন সূত্র বলছে, তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে গোপনে আছেন।