পরিকল্পিত লোডশেডিংই সত্যি হলো

ছবি: দ্য মিরর এশিয়া

দ্য মিরর এশিয়ায় সংবাদ প্রকাশের একদিন পরই পল্লী বিদ্যুত সমিতির (পবিস) কর্মীরা সারাদেশে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি পালন করেছে। দাবি আদায়ের কথা বলে বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় পবিসের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় পবিসের কয়েকজন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছে যৌথ বাহিনী।

গত বুধবার দ্য মিরর এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮-২৮ অক্টোবর সময়ে দেশে  পরিকল্পিতভাবে লোডশেডিং করার পরিকল্পনা করছে পবিসে কর্মরত আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যাতে করে তাদের পরবর্তী লং মার্চের সময় সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তৈরি হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ব্যানারে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ঢাকামুখী লং মার্চের পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের সবাইকে লং মার্চে যোগ দেওয়ার জন্য দলটির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারকে বিপাকে ফেলতেই আওয়ামী লীগের ইন্ধনে পবিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এবার মাঠে নেমেছেন। অতীতের কয়েকটি ব্যর্থ চেষ্টার পর এবার সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্ন ঘটিয়ে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুন: নভেম্বরে ঢাকামুখী লং মার্চের পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের

রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পলাতক শেখ হাসিনা আমলের অবৈধ সুবিধাভোগী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্তত ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন চক্রান্তের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাম্প্রতিক এই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম রাজন কুমার দাস। তিনি নিজেকে পলাতক শেখ হাসিনার পুত্র বলে অতীতে পরিচয় দিতেন। ৫ আগস্টের পর তিনি ঘাপটি মেরে ছিলেন। বর্তমানে তিনি পুরো আন্দোলনটির সমন্বয় করছেন। 

এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পবিসের সিনিয়র এজিএম মো. মকবুল হোসেন, নোয়াখালী পবিসের ওয়্যারিং পরিদর্শক সালাম জাবেদ, সিরাজগঞ্জ পবিসের ডিজিএম মো. বেলাল, ঢাকা পবিস-১ এর এজিএম আব্দুল হাকিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পবিসের ডিজিএম আসাদুজ্জামান ভুইয়া, কুমিল্লা পবিস-১এর ডিজিএম দীপক কুমার সিংহ, নেত্রকোনা পবিসের এজিএম মনির হোসেন, ঝালকাঠি পবিসের এজিএম ইয়াসির আরাফাত, ঢাকার বান্দুরা সাব অফিসের এজিএম মো. সালাহ উদ্দিন, ঢাকা পবিস-১ এর সিনিয়র জিএম আবুল হোসেন, কুমিল্লা পবিস-৪ এর সিনিয়র জিএম মো. জাকির হোসেন, বরিশাল পবিস-১ এর জিএম মো. হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও পবিসের জিএম মো. মাহফুজুর রহমান ও নওগাঁ পবিসের জিএম শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমান এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

সূত্র বলছে, আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের সরকার উৎখাতে বেশ কয়েকটি ক্যু চেষ্টা করে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। তবে সরকার ও ছাত্র-জনতার সতর্ক অবস্থানের কারণে তার সবগুলো ব্যর্থ হয়।