ইউরোপে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা চায় বাংলাদেশ
ইউরোপে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বৈধতা এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধা নীতির সংশোধন চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) যৌথ কমিশন সভায় এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
সভায় এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও বাংলাদেশ যেন ইউরোপের বাজারে জিএসপি সুবিধা পায় সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বহুপাক্ষিক উদ্যোগের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টিও আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভাকক্ষে দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ইইউ যৌথ কমিশনের ১১তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং ইইউয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি বৈঠকে নেতৃত্ব দেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আরো দক্ষ শ্রমিক নিতে চায় ইইউ। ইউরোপের দেশগুলো প্রায় ১০টি খাতে বাংলাদেশ থেকে জনবল নিতে আগ্রহী। ইইউভুক্ত ঐ দেশগুলোতে বৈধপথে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে সরকার। সব কিছু ঠিক থাকলে দুপক্ষের সম্মতিতে রোডম্যাপটি প্রকাশ করা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি, ইতালি, গ্রিস ও রোমানিয়া জনশক্তি নিতে আগ্রহী। যৌথ কমিশন সভায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে খাতগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আইসিটি, কেয়ারগিভিং, নির্মাণশিল্প, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি, কৃষি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত, জাহাজ নির্মাণ ও তৈরি পোশাকশিল্প।
২০২২ সালের এপ্রিলে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম ঘোষণা করে ইইউ। এর মাধ্যমে ইইউভুক্ত দেশগুলোর বাইরে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশকে বিবেচনায় নিয়েছে, যেখান থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলো দক্ষ শ্রমিক নিতে চায়। সে হিসেবে বৈধপথে ইউরোপে বাংলাদেশি পাঠানোর সুযোগ আরো বাড়বে।
ট্যালেন্ট পার্টনারশিপের অগ্রগতি নিয়ে বিশদ আলোচনা করে বাংলাদেশ-ইইউ। একদিকে ইউরোপ বৈধপথে আরো দক্ষ শ্রমিক চায়, অন্যদিকে অবৈধপথে নানানভাবে অনেক বাংলাদেশি ইউরোপে বসবাস করছে। তাদের বৈধতা দেওয়ার সুপারিশও করেছে বাংলাদেশ।
বৈঠক সূত্র আরো জানায়, জিএসপি নীতির সংশোধন নিয়ে ইইউ প্রতিনিধিদের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে অন্যতম ইইউ নতুন (খসড়া) জিএসপি স্কিম, বিশেষ করে সুরক্ষা ধারাগুলো সংশোধন করার কথা বিবেচনা করা। যেন বাংলাদেশের সব পণ্য, যার মধ্যে তৈরি পোশাক (আরএমজি) পণ্যগুলো জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে পারে।
এছাড়া বাংলাদেশের পণ্য যেন শুল্কমুক্তভাবে ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করতে পারে সেজন্য জিএসপির কিছু নীতি সংশোধন করার অনুরোধ করা হয়েছে। নতুন ইইউ জিএসপি ব্যবস্থা এবং এর সুরক্ষা বিধানগুলো স্থগিত করার কথা বলা হয়েছে। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে যেন ইইউ বাজার শাস্তি না দেয় সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।