৫৫% তরুণ দেশ ছাড়তে আগ্রহী, নেপথ্যে বেকারত্ব, দুর্নীতি ও বৈষম্য
দেশে বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের ৪২% তরুণ বেকারত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তাদের মতে— বেকারত্বের প্রধান কারণ দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, নিয়োগে বৈষম্য, এবং কাজ ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য না রাখা। এই সমস্যাগুলোর কারণে ৫৫% তরুণ বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'নেক্সট জেনারেশন বাংলাদেশ ২০২৪' শীর্ষক এক গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ও ডিসেম্বরে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩,০৮১ জন তরুণের সাক্ষাৎকার নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। এতে উঠে আসে, ২০১৫ সালের তুলনায় এখন দেশকে সঠিক পথে এগোচ্ছে মনে করা তরুণদের সংখ্যা কমে ৫১% হয়ে গেছে, যেখানে ২০১৫ সালে এটি ছিল ৬০%।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ৩৭% তরুণ বলছেন— বেকারত্বের মূল কারণ দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ, ২০% তরুণ নিয়োগে বৈষম্য এবং ১৮% তরুণ পারিবারিক জীবনের চাপের কারণে বেকারত্বকে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ৪৪% তরুণ আগামী এক বছরে ব্যবসা শুরু করতে চান।
সরকার দেশের তরুণদের আকাঙ্ক্ষাকে কেন্দ্রে রেখে কাজ করছে। সরকারের মৌলিক কাজ হবে মানবাধিকার রক্ষা, বৈষম্যহীন আইন ও নীতি কার্যকর এবং রাষ্ট্রে জনস্বার্থভিত্তিক নীতি কার্যকর করা।
এছাড়া, ৭২% তরুণ ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে আগ্রহী ছিলেন, তবে ৬৫% তরুণ নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করেছেন।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, ৬৬% তরুণ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। পুরুষদের মধ্যে ৭৭% এবং নারীদের মধ্যে ৫৬% তরুণ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ২৭% নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার এবং ৩০% তরুণ মনে করেন নারীরা পুরুষদের সমান নন, ২৫% তরুণ নারীদের ঘরের বাইরে পুরুষের মতো স্বাধীনতা দেওয়ার বিরোধী।
শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে তরুণদের ৪৯% বলেছেন, পাঠদানের মান অত্যন্ত নিম্ন, বিশেষ করে আধুনিক কর্মবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন পাঠ্যক্রমের কারণে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থনে যুক্তরাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ বলেন, সরকার দেশের তরুণদের আকাঙ্ক্ষাকে কেন্দ্রে রেখে কাজ করছে। সরকারের মৌলিক কাজ হবে মানবাধিকার রক্ষা, বৈষম্যহীন আইন ও নীতি কার্যকর এবং রাষ্ট্রে জনস্বার্থভিত্তিক নীতি কার্যকর করা।
অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কাউন্সিল দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হেলেন সিলভেস্টার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের একটি অংশে ‘স্কিলস ফর দ্য ফিউচার’ শিরোনামে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।