বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে অপহরণ, তরুণের লাশ মিলল প্রেমিকার প্রেমিকের বাড়ির উঠনো

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে অপহরণ, তরুণের লাশ মিলল প্রেমিকার প্রেমিকের বাড়ির উঠনো

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেরপুরে অপহরণের শিকার কলেজছাত্র সুমনের (১৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের সাতদিন পর মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে সাবেক প্রেমিকা আন্নির অপর প্রেমিক জেলা শহরের সজবরখিলা মহল্লার রবিন মিয়ার বাড়ির উঠান থেকে মাটিচাপা অবস্থায় সুমন মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সুমন শেরপুর পৌরসভার কসবা বারাকপাড়া নিমতলা এলাকার কৃষক নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশের কাছে দায়ের করা স্বজনদের অভিযোগে জানা যায়, ৪ নভেম্বর বিকেলে সুমন মিয়া কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছালে আন্নির উপস্থিতিতে আরো ৩ থেকে ৪ জন যুবক জোরপূর্বক সুমনকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি জিডি করেন সুমনের বাবা।

গত কয়েকদিনেও সুমনের সন্ধান না পেয়ে তার মা-বাবা, স্থানীয় এলাকাবাসী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থী গত রোববার দুপুরে পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুমনকে উদ্ধারসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

অভিযোগের পর ১০ নভেম্বর রোববার রাতে শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকা থেকে আন্নির বাবা শিক্ষক আজিম উদ্দিন ও আন্নি আক্তারকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়।

তবে অপহরণের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ থেকে আন্নির অপর প্রেমিক রবিন ওরফে রনিকে আটক করলে ঘটনার জট খোলে। পরে পৌর শহরের সজবরখিলায় পুলিশ সদস্য ফোরকান আলীর ছেলে রবিনের বাড়ির উঠানে তার দেখানো জায়গা থেকে সুমন মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এমন খবরে সজবরখিলা এলাকার মানুষ হতবাক হয়ে যান।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সুমন ও আন্নির মাঝে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং আন্নি সুমনকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে নিয়ে যান৷ একাধিক প্রেমে আসক্ত আন্নি রবিনের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্কে জড়ান৷ এ নিয়েই অঘটন ঘটে থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।

লাশ উদ্ধারের পর রাতেই জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত সুমনের স্বজনরা আন্নি ও রবিনসহ জড়িত সব অপরাধির ফাঁসি দাবি করছেন। 

এ সম্পর্কে শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করার পর ময়মনসিংহ থেকে ঘাতক রবিনকে আটক করা হয়। পরে তার দেখানো জায়গা থেকে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার হয়।