শিল্পপতি জসিমকে ১১ টুকরো করার রোমহর্ষক বর্ণনা রুমার
কাফরুলের তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাট নিয়ে তার ছোট বোন, বান্ধবী, ভাবি ও তার বাচ্চা বসবাস করেন রুমা। এই বাসায় আসার পর জসিম উদ্দিন মাসুমকে দুধের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয়। অচেতন অবস্থায় দুইদিন থাকার পর মঙ্গলবার একটি কক্ষের বাথরুমে নিয়ে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরো করা হয় জসিম উদ্দিন মাসুমকে। রুমার এক বন্ধুকে দিয়ে দুটি ব্যাগ নিয়ে আসার পর দুটি ব্যাগের ভেতরে সাত টুকরো রূপগঞ্জের একটি লেকের পাড়ে এবং অন্য চারটি অংশ ৩০০ ফিট এলাকায় একটি কাশবনে ফেলে দেন রুমা। স্বেচ্ছায় এবং অকপটেই হত্যাকাণ্ডের সব তথ্য বিচারকের খাস কামরায় স্বীকার করেন রুমা ও রুকু।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁদ ডাইংয়ের মালিক জসিম উদ্দিন মাসুমকে হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তার কথিত প্রেমিকা রুমা আক্তার ও তার বান্ধবী রুকু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হায়দার আলী। স্বেচ্ছায় এবং অকপটেই হত্যাকাণ্ডের সব তথ্য বিচারকের খাস কামরায় স্বীকার করেন রুমা ও রুকু। ১১ টুকরা করে শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুমকে হত্যা ও লাশ ফেলে দিতে রুমাকে সহায়তা করে তারই বান্ধবী মডেল রুকু।
জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান।
আদালত সূত্র থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলের লেক থেকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) তিনটি পলিথিনে মোড়ানো মাসুমের সাত টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা।
শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাফরুল থেকে রুমা ও রুকুসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরে রূপগঞ্জ থানায় হওয়া হত্যা মামলায় থেকে রুমা ও রুকু গ্রেফতার দেখিয়ে বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নির্মম এমন হত্যাকাণ্ডের মামলায় তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হত্যার পর কাফরুলের বাসায় ছিলেন রুমা। কোনো ধরনের টেনশন ছাড়াই চলাফেরা ও ঘুমাতে থাকেন রুমা। বুধবার রাতে পুলিশ তাকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনার সবকিছুই অকপটে স্বীকার করেন রুমা।
রুমার দাবি, কাফরুলের তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাট নিয়ে তার ছোট বোন, বান্ধবী, ভাবি ও তার বাচ্চা বসবাস করেন। এই বাসায় আসার পর জসিম উদ্দিন মাসুমকে দুধের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয়। অচেতন অবস্থায় দুইদিন থাকার পর মঙ্গলবার একটি কক্ষের বাথরুমে নিয়ে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরো করা হয় জসিম উদ্দিন মাসুমকে। রুমার এক বন্ধুকে দিয়ে দুটি ব্যাগ নিয়ে আসার পর দুটি ব্যাগের ভেতরে সাত টুকরো রূপগঞ্জের একটি লেকের পাড়ে এবং অন্য চারটি অংশ ৩০০ ফিট এলাকায় একটি কাশবনে ফেলে দেন রুমা।
বৃহস্পতিবার রুমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাশবন থেকে জসিম উদ্দিন মাসুমের দেহাংশের আরো চারটি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। হাত-পা ও কোমর থেকে বুকের খণ্ডিত অংশ ছিল পরবর্তী উদ্ধার হওয়া দেহাংশের।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও ব্লেড বনানীর ২০ নম্বর সড়কের একটি বাসায় রেখে আসেন রুমা। পরে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে চাপাতি, ব্লেড ও মাসুমের কিছু কাপড় জব্দ করা হয়েছে। যার কিছুই জানতেই পারেনি ওই ফ্ল্যাটের অন্যরা।