‘গুরুত্বপূর্ণ সফরে’ ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঢাকায়
যুক্তরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, নিরাপত্তা, বাণিজ্য সহযোগিতা এবং অভিবাসনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার দেশের সমর্থনের ওপর গুরুত্বারোপ করতে তার এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সফরকালে প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
গত আগস্টে অন্তর্র্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে এটিই প্রথম যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যয়ের সফর।
সফরে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।
ক্যাথরিন ওয়েস্ট তার সফরের আগে বলেছিলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত গড়ে তুলতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর ঢাকা সফরে অগ্রাধিকারের অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তা, প্রয়োজনীয় পরিসেবা ও মানবিক সহায়তা প্রদানে যুক্তরাজ্যের নতুন তহবিল ঘোষণা করবেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এই সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্টকে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। এই সফর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরও গভীর ও সম্প্রসারিত করবে।
বাংলাদেশের চলমান রূপান্তরে যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়ে কুক বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই হয় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারে সহায়তা করবে।
সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাজ্য। এই বছরের মাঝামাঝি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে প্রাণহানি ও আহত হওয়ার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আহতদের নিবিড় যত্ন প্রদানের জন্য যুক্তরাজ্য একটি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম মোতায়েন করেছিল।
প্রতিমন্ত্রী ওয়েস্ট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করতে ছাত্র নেতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
এছাড়াও তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় অন্বেষণে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। যুক্তরাজ্য সম্প্রতি মানবিক সহায়তার জন্য ঘোষিত অর্থায়ন থেকে এরই মধ্যে দুই লাখ রোহিঙ্গাকে তিন মাসের খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। নতুন এই তহবিল রোহিঙ্গাদের বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, সুরক্ষা সেবা ও আশ্রয়ের সুযোগ নিশ্চিতে আরও সহায়ক হবে।
এছাড়াও, যুক্তরাজ্য এ বছরের মাঝামাঝি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের সহায়তা প্রদান করবে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবে।