নেত্রকোনায় দুই সাংবাদিককে জিম্মি করে মারধর, মুক্তিপণ আদায়
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দুই সাংবাদিককে জিম্মি ও বেধড়ক মারপিট করে মুক্তিপণ আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে তাদের সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তোভোগী সাংবাদিকরা হচ্ছেন, দৈনিক আমাদের সময়ের কেন্দুয়া উপজেলা প্রতিনিধি রাখাল বিশ্বাস ও দৈনিক স্বদেশ সংবাদের একই উপজেলার প্রতিনিধি রোকন উদ্দিন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাখাল বিশ্বাস ও রোকন উদ্দিন গত দুদিন ঢাকার উত্তরার একটি এনজিও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা বাড়ি ফিরছিলেন।
বিমানবন্দরের সামনে ময়মনসিংহগামী বাসে ওঠার জন্য অপেক্ষা করার সময় একটি মাইক্রোবাস এসে তাদের সামনে থামে। তখন মাইক্রোবাসের চালক ও অন্য এক যাত্রী তাদের উদ্দেশে বলেন, তারা মাইক্রোবাস নিয়ে ময়মনসিংহ যাচ্ছেন এবং চাইলে টাকার বিনিময়ে তারাও যেতে পারেন। তাদের কথা বিশ্বাস করে দুজনই মাইক্রোবাসে উঠেন। এরপর মাইক্রোবাসটি গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় আসার পর যাত্রীবেশে থাকা সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে ফেলে।
তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, স্বর্ণের আংটি ও নগদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে তাদের চোখ ও হাত বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে বাড়িতে ফোন করে বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠানোর চাপ দেয়। জীবন বাঁচাতে তারা স্বজনদের কাছে ফোন করে টাকা পাঠানোর অনুরোধ জানান। পরে তাদের স্বজনরা কয়েক দফায় ১ লাখ টাকা পাঠান। এরপর সন্ত্রাসীরা রাত ৯টার দিকে তাদের রাস্তায় ফেলে দিয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে চলে যায়।
পরে আহত দুই সাংবাদিক রাস্তা পেরিয়ে হোতাপাড়ার কাছাকাছি একটি সেনা ছাউনির সদস্যদের সহযোগিতায় একটি বাসে করে ময়মনসিংহ ফেরেন। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বর্তমানে দুই সাংবাদিকই আহত এবং নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন।
সাংবাদিক রাখাল বিশ্বাস বলেন, বেধড়ক মারধরের পর টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। বাড়িতে কল দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকেও বিকাশে টাকা নেয়। পরে সড়কের পাশে ফেলে যায়। একটি বাসে করে ময়মনসিংহ পৌঁছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিই। পরে সকালে নিজের বাড়ি কেন্দুয়ায় পৌঁছেছি। এখন অনেকটা সুস্থ আছি। তবে মারধরের যন্ত্রণায় ভুগছি।