পর্তুগালে পুলিশের এমন আচরণ আগে কখনো দেখেননি অভিবাসীরা

পর্তুগালে পুলিশের এমন আচরণ আগে কখনো দেখেননি অভিবাসীরা

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশি অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকা রুয়া বেনফরমোজোতে গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। এই অভিযানে তল্লাশি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় পর্তুগিজ নাগরিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।

পুলিশে অভিযানের সময় একটি ভবন থেকে ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, রাস্তায় অবস্থানরত সবাইকে সারিবদ্ধভাবে পেছন ফিরে দেয়ালের দিকে মুখ করে ও দেয়ালের উপর হাত রেখে দাঁড় করিয়ে রেখে তল্লাশি করা হচ্ছে। পুলিশের এমন তল্লাশি অভিযানকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে, বইছে সমালোচনার ঝড়। অভিবাসীরা পর্তুগাল পুলিশের এমন আচরণ আগে কখনো দেখেননি বলেও জানিয়েছেন।  

পুলিশ বলছে, এ এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়া, এমনকি স্থানীয় অধিবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এই অভিযান চালানো হয়েছে। 

অভিযানে তল্লাশির প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র লুইস ইলিয়স।

তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে গত বছর থেকে ৫২টি অপরাধের রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া গত মে মাসে ছুরিকাঘাতে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তাই জনগণের নিরাপত্তায় এই অভিযান। 

এদিকে তল্লাশিতে অমানবিকতা নিয়ে দেশটির সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন প্রতিবাদ করেছে।

এছাড়া দেশটির জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল সোসালিস্ট পার্টি এবং ব্লক এস্কেরদা এর প্রধান দলীয় নেতা ওই এলাকাটি পরিদর্শন করেন এবং অভিবাসীদের সহমর্মিতা প্রদর্শন করেন। 

তারা বলেন, সরকার কট্টর ডানপন্থীদের ভোটের অংশীদার হওয়ার জন্য এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। 

পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বেশ কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ভীত হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি পুলিশের এই আচরণ কখনো দেখেননি। 

অন্য একটি পক্ষ বলছে, এখানকার অভিবাসীদেরও কিছু দোষ ত্রুটি রয়েছে অর্থাৎ সঠিকভাবে এ দেশের নিয়ম অনুযায়ী পাবলিক প্লেস ব্যবহারের জ্ঞান না থাকা। এমনকি মধ্যরাতের পরও মানুষের আনাগোনা স্থানীয়দের দৈনন্দিন জীবনে অনেক ব্যাঘাত ঘটে। তাই সবাইকে পর্তুগিজ সাধারণ নিয়ম কানুন মেনে চলার পরামর্শ প্রদান করেন তারা।

অন্যদিকে বেশ কয়েকটি সামাজিক এবং অভিবাসীদের সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা মনে করছে, এই ধরনের অভিযান কট্টর ডানপন্থীদের আরও বেশি উসকে দেবে। এ ছাড়া পর্তুগালে নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা বা রেসিজমের কোনো স্থান নেই।