আয়নাঘর ঘুরে দেখে ফেসবুকে যা লিখলেন ভারতীয় সাংবাদিক
ঢাকার কচুক্ষেত, উত্তরা ও আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এবং ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় সাংবাদিক অর্ক দেব, যিনি ‘ইনস্ক্রিপ্টিডটমি’-এর সম্পাদক। অর্ক দেব এর আগে আনন্দবাজার ও নিউজ১৮ সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন।
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে অর্ক দেব নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি সেখানকার একটি ইলেকট্রিক চেয়ারের ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘এই চেয়ারটা দেখে রাখা জরুরি। ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনার আয়নাঘরের একটি কক্ষে রাখা এই চেয়ার (আগারগাঁও অঞ্চলে)। ‘হাই ভ্যালু’ বন্দিদের ইলেকট্রিক শক দিতে ব্যবহার হতো এই চেয়ার।’
তিনি আরও জানান, ‘ডিজিএফআইয়ের কাউন্টার টেররিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) এই আয়নাঘরের দায়িত্বে ছিল। একজস্ট ফ্যানের শব্দে বন্দিদের কান্না ও গোঙানির শব্দ শোনা যেত, যা এই ঘরগুলোতে সারাক্ষণ চলত। অর্ক দেব লেখেন, ‘আজ থেকে গোটা বিশ্ব আয়নাঘরের সব ছবি দেখবে।’
অর্ক দেব আরও একটি পোস্টে মাইকেল চাকমার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে লিখেন, ‘প্রথম যে দুটো রুম দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে ১১৩ নম্বর সেল একেবারে বাথরুমের পাশে ছিল। সেখানে ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরা চালু থাকত। আমি এই সেলে প্রায় দুই বছর বন্দি ছিলাম। একই লাইনের ১১৭ নম্বর রুমে দেড় বছরেরও বেশি সময় ছিলাম।’
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে, আওয়ামী লীগ শাসনামলকে ‘আইয়ামে জাহিলিয়াতের’ (অজ্ঞতার যুগ) সঙ্গে তুলনা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি গুম কমিশনকে আয়নাঘর আবিষ্কারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আইয়ামে জাহিলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়ামে জাহিলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সর্বত্র।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, শুধু ঢাকা শহর নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা আয়নাঘরগুলোও খুঁজে বের করা হবে। তিনি আরও জানান, দেশে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ আয়নাঘর রয়েছে এবং জাতিসংঘের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার নির্দেশে এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।