ভারতে সাক্ষাৎ হতে পারে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়ের
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য শিগগিরই তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতে আসতে পারেন বলে একাধিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮.কম।
প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি এক অজ্ঞাত জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধৃত করে জানায়, এই সম্ভাব্য সফরে জয় তার মায়ের সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করতে পারেন এবং কলকাতাও যেতে পারেন।
এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সাবেক এক মন্ত্রী নিউজ১৮-কে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে তিনি (জয়) শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন এবং নির্বাসনে থাকা নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন। অন্তর্বর্তী সরকার অনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে। এটি আসন্ন নির্বাচনে দলটিকে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার কৌশলের অংশ।’
যদি সত্যিই জয় এই সফর করেন, তবে এটি হবে গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের ফলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে তার ছেলের প্রথম সাক্ষাৎ।
আজ রবিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি তারিক চয়ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি জয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার তার আগের পাসপোর্ট বাতিল করার পর তিনি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি একজন মার্কিন নাগরিক হিসেবে ভারতে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
আওয়ামী লীগের নির্বাসিত নেতারা জয়ের সম্ভাব্য সফর নিয়ে আশাবাদী।
এমন এক সময়ে তিনি ভরিত সফর করবেন, যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে।
গত ১২ মে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ কার্যত আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে না। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন থাকা বাধ্যতামূলক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এগুলো যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন।
আরও জানায়, তাই আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হলো।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তীব্র জনরোষের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতে নির্বাসনে আছেন। তার ছেলের সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তার সরাসরি দেখা হয়নি।
সম্প্রতি পর্যন্ত শেখ হাসিনা জুম এবং অন্যান্য ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন।
তবে সর্বশেষ সরকারি নির্দেশনার পর দলের কার্যক্রমের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।