চাচাতো বোনকে ভালোবেসে ৪ টুকরো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র

চাচাতো বোনকে ভালোবেসে ৪ টুকরো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র

চাচাতো বোনকে ভালোবেসে দুর্বৃত্তদের প্রতিহিংসার শিকার হলেন ঢাকার প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ছাত্র ওমর ফারুক সৌরভ (২৪)।

রোববার (২ জুন) ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সদর উপজেলার মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদীতে লাগেজভর্তি ঐ ছাত্রের চার টুকরো খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সৌরভ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের ইউসুফ আলী আকন্দের ছেলে। তিনি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্র ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার উত্তরা এলাকায় বসবাস করতেন।

পুলিশ জানায়, রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সদর উপজেলার মনতলা সেতুর নিচে সুতিয়া নদীতে একটি কালো রঙের ট্রলি (লাগেজ) দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নদীর পানিতে কচুরিপানার মধ্য থেকে লাগেজটি ডাঙ্গায় তুলে আনে। লাগেজ খুলতেই দেখা যায়- এক ব্যক্তির দুই পা ও মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন চার খণ্ডের মরদেহ। সঙ্গে পাওয়া গেল দুটি বালিশ, কাঁথা ও একটি পর্দা।

ময়মনসিংহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম ফকির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, খণ্ডিত মরদেহের পরিচয় ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ, ডিবি, পিবিআই ও সিআইডি যৌথভাবে তদন্ত করেছে। মরদেহের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ব্যক্তিকে অন্য কোনো জায়গায় হত্যা করে মরদেহটি সেতুর ওপর থেকে সুতিয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে কোনো এক সময় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলেও ধারণা করছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, হত্যার পর লাগেজে মাথা ছাড়া মরদেহ ভরে ব্রিজের ওপর থেকে পানিতে এবং পলিথিনে মোড়ানো মাথা পাট ক্ষেতের কাছে ফেলে যায় ঘাতকরা। লাগেজে শরীরের খণ্ডিত অংশের সঙ্গে কাঁথা-বালিশও পাওয়া গেছে। লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ‘মেশিন’ দিয়ে গলা ও পা কাটা হয়েছে। পরিচয় যাতে শনাক্ত না করা যায়, সেজন্য আলামতও নষ্ট করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জেলা ডিবির ওসি ফারুক হোসেন জানান, রোববার সকালে স্থানীয়রা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদীতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে কোতোয়ালি থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি লাগেজের ভেতর থেকে মাথা ছাড়া শরীরের চার খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে। অদূরেই পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় মাথাটি পাওয়া যায়।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, খণ্ডিত মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাাতল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা জানান, হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রেমঘটিত কারণ রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। সৌরভ তার চাচাতো বোনকে ভালোবাসতেন। কিন্তু মেয়ের পরিবার প্রেমের বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। হত্যাকাণ্ডের খবর সর্বত্রই প্রচার হলে সৌরভের বোন ও মামা মরদেহ শনাক্ত করেন বলেও জানান তিনি।