নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে: সুজন

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার

দেশে চলমান উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘দেশে নাই নাই নাইয়ের নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে ভোটার নাই, বিরোধী দল নাই, অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নাই। এটি নাইয়ের নির্বাচন। নির্বাচনটা নির্বাসনে চলে গেছে।’

মঙ্গলবার সুজন আয়োজিত ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের গতি প্রকৃতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীদের তথ্যের বিশ্লেষণ উপস্থাপন’ শীর্ষক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘যে নির্বাচন হচ্ছে, তা নির্বাচনের মতোই মনে হয় না। নির্বাচনে যেই রকম উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে, তার কিছুই নেই। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া কাঁচা দাঁত তোলার মতোই। কাঁচা দাঁত তুলতে যেমন কষ্ট হয়, নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্য পেতে তেমনই কষ্ট পেতে হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘ভোটার নাই, বিরোধী দল নাই, অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নাই। এটি নাইয়ের নির্বাচন। নির্বাচনটা নির্বাসনে চলে গেছে তারই অবস্থা। এটার মূল কারণ হচ্ছে আস্থাহীনতা। নির্বাচনী অবস্থা ভেঙে গেছে। তাই এই ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান নির্বাচন অনুষ্ঠান করে, পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে তাদের প্রতিও আস্থাহীনতা রয়েছে। আস্থাহীনতার কারণে বিরোধী দলগুলোও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।’ 

বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘আমরা ভোটপাগল জাতি এখন ভোটের খড়ায় ভুগছি। আমরা ভোটপাগল থেকে ভোটখড়ার জাতিতে পরিণত হয়েছি। নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আইন সংশোধন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় প্রতীকে করার দাবি জানান সুজন সম্পাদক। 

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক বলেন, ‘এখন নির্বাচন নাই। নির্বাচন উঠে গেছে।  লোক দেখানো এক্সারসাইজ করছি। তার সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে এই উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন থেকে ৩৫-৩৬ শতাংশ ভোটের কথা বলা হলেও মনে হয় না জনগণ এতে বিশ্বাস রাখতে পারছে।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশে জমিদারি প্রথা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এখন গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নাই। এরই কারণে মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, কন্যা, পুত্র, ভাই, ভাতিজা নির্বাচন করছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জমিদারি তৈরি করা হচ্ছে। এখন স্থানীয় সরকার নামকাওয়াস্তে আছে।’

সুজনের নির্বাহী সদস্য ড. হামিদা হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন প্রধান কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।