গুলশানে পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত

রাজধানী ঢাকার কুটনৈতিকপাড়া খ্যাত বারিধারায় এক পুলিশ সদস্য আরেক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বারিধারায় অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্য কাউসার আরেক পুলিশ সদস্য মনিরুলকে গুলি করে হত্যা করেছে।

কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো সে বিষয়ে ফিলিস্তিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তাকর্মী গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার সময় তারা দূতাবাসের ভেতরে ছিলেন। হঠাৎ করে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে বের হয়ে আসেন। বাইরে আসার পর কাউসারকে দেখেন ফিলিস্তিন দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে মনিরুলের মরদেহ।

তিনি আরও জানান, তখন তারা কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞেস করেন যে কী হয়েছে? কাউসার বলেন, শালা (মনিরুল) নাটক করতেছে, এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে! এই কথা বলে কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশে রোডে চলে যান। এরই মধ্যে সবাই বুঝে ওঠেন যে কাউসার মনিরুলকে গুলি করেছে। এরপর ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা কাউসারকে আটক করেন।

নিহত কনস্টেবল মনিরুল পুলিশের ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। শনিবার রাতে ফিলিস্তিন দূতাবাসলাগোয়া উত্তর পাশের গার্ড রুমে তার ডিউটি ছিল। একই সময়ে ডিউটিরত ছিলেন কাউসার আহমেদ। 

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে কনস্টেবল কাউসার সহকর্মী কনস্টেবল মনিরুলকে গুলি করেছে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। একই ঘটনায় আরও দুজন আহত হন।

ঘটনার পরপরই পুলিশের সোয়াট টিম ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। এ সময় ফিলিস্তিন দূতাবাসের অদূরে ফুটপাত পেরিয়ে সড়কের পাশে কনস্টেবল মনিরুলের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে ছিল। তখনও তার ব্যবহৃত রাইফেলটি তার পিঠের ওপর ছিল। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে যান।

ঘটনার সময় ওই সড়ক ধরে কর্মস্থল থেকে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন একাত্তর টিভির কর্মী হাসান আহমেদসহ কয়েকজন। হাসান আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, তারা ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের এক সদস্যকে পড়ে থাকতে দেখেন। পাশেই অস্ত্রধারী আরেক পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের চালক গাড়ির গতি থামালে তিনি গাড়ি থেকেই জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে? দাঁড়িয়ে থাকা অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য হুংকার দিয়েই তাদের দিকে অস্ত্র তাক করে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তিনি জানান, ওই সময়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। তখন আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝলেও গুলির কারণে কেউ সামনে আসতে সাহস পাচ্ছিল না।