উৎপাদনকারী না হয়েও মাদকের কবলে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উদ্বেগজনক হারে তরুণ সমাজে মাদকাসক্তি বাড়ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও মাদক সমস্যার কবলে পড়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, এই সমস্যা মূলত ভৌগলিক কারণে। দেশে অবৈধ মাদক প্রবেশ করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে। বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক ইয়াবার অনুপ্রবেশ ঘটে মিয়ানমার থেকে। ভারত থেকে আমাদের দেশে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইনজেক্টিং ড্রাগ অনুপ্রবেশ করে।

বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ বাস্তবায়নে সব সংস্থা বদ্ধপরিকর। দেশের তরুণ সমাজ ও তারুণ্যের শক্তিকে মাদক ও নেশার হাত থেকে রক্ষার জন্য মাদক নির্মূলে সরকার গত ১৫ বছরে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। সেজন্য মাদকাসক্ত শনাক্তকরণের লক্ষ্যে ডোপ টেন্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে মাদকাসক শনাক্তকরণে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এ ডোপ টেস্ট চালুর ফলে তরুণ সমাজ মাদক গ্রহণে নিরুৎসাহিত হবে।

একই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দেশে গত ১৬ বছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৪ লাখ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১১ লাখ ১৩ হাজার ৪৭০ মামলার বিপরীতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি জানান, গত ১৬ বছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ৮৩ হাজার ৪১৭টি মাদক বিরোধী সভা, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ এবং ১৩৭টি স্থানে মাদকবিরোধী শর্ট ফিল্ম প্রদর্শন করেছে। একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দিদের মধ্যে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী সভা করা হয়েছে। মাদক গ্রহণ বন্ধে ৫ হাজার ৮৩ জন শিক্ষককে মেন্টর হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী ৩১ হাজার ৮০টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাদকবিরোধী ১০৪টি টকশো প্রচার করা হয়েছে। প্রিন্ট মিডিয়ায় ৫৪৩টি এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ৫১০টি মাদকবিরোধী বিজ্ঞাপন ও টিভি স্ক্রল প্রচার করা হয়েছে। মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সংবলিত ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৮২টি স্টিকার বিতরণ করা হয়েছে।