নজরদারিতে ৬ মডেল ও এক নায়িকা

নজরদারিতে ৬ মডেল ও এক নায়িকা

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছয় মডেল ও এক নায়িকাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। টলিউডে একাধিক সিনেমায় অভিনয় করা এই নায়িকা ও ছয় মডেলকে যেকোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে ডাকা হতে পারে। এমপি আনার হত্যা মামলার তদন্তে থাকা ডিবি-সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, আনার হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারী শাহীন এখন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি কলকাতায় যাওয়ার সময় যেমন শিলাস্তি রহমান ছিল তেমনি অন্য মডেলরাও ছিল। সাথে একজন নায়িকাও ছিল। তাদের মধ্য থেকে তিনি নায়িকাকে কলকাতার পঞ্চলা ও গৌরবতীর ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় ৩০ বছর বয়সী সেই নায়িকা কলকাতার একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে সুনাম কুড়িয়েছেন। ঢাকার গোয়েন্দারা এসব তথ্য জানতে পেরেছে কলকাতার সিআইডির কাছ থেকে।

ডিবির আরেকটি সূত্র জানায়, এরমধ্যে তারা বেশি সন্দেহ করছেন নায়িকাকে। কারণ তিনি কলকাতায় শাহীনের কাছেই ছিলেন। এ ঘটনায় ডিবি তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল। তারা আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। এরই মধ্যে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল গিয়াস আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকেও ডিবিতে আনা হয়েছে। গ্যাস বাবু জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে ডিবি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র বলছে, সংসদ সদস্য আনার হত্যায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নাম আসছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বিভিন্ন ধরনের তথ্য আছে। যখন যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবেন। আপনারা জানেন আমরা কাউকে হয়রানি করি না এবং কেউ অপরাধী হয়ে থাকলে তাকে পালানোর সুযোগও দেই না। আমি আগেই বলেছি, তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে কলকাতার সিআইডির কাছে সিয়াম ও জিহাদ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের সরবরাহকৃত তথ্য বাংলাদেশের ডিবিকেও জানাচ্ছে তারা। দুই দেশের গোয়েন্দারা এখন যৌথভাবে তথ্য আদান-প্রদান করে এই হত্যাকাণ্ডে কারা কারা জড়িত ছিল তা বের করার চেষ্টায় আছেন।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে নিউটাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতের পুলিশের বরাত দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২২ মে আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।