সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, হটলাইন চালু

সিলেটে বন্যা। ফাইল ছবি।

সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বন্যা দেখা দেওয়ায় সিলেটের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার সচিবালয়ে ঈদপরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় ও বন্যাকবলিত এলাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘দেশের কয়েক জায়গায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ডায়রিয়া এবং পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মুজত রাখতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে, বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’ 

উল্লেখ্য ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। মহানগর ও জেলাজুড়ে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ১৫টি এলাকার ১০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বিদ্যুতের সাবস্টেশন। সুরমা নদী ছাপিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এটি প্লাবিত হলে দক্ষিণ সুরমার প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ। নদীর পাড়ে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন তারা।

গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই গত শনিবার ফের বন্যাকবলিত সিলেট। 

সিলেটের মেয়রের তৎপরতা: এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে নগর ভবনের সভাকক্ষে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘পাহাড়ি ঢল আর ভারি বর্ষণে সিলেট নগরীতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা শুরু হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রান্না করা খাবার ছাড়াও ওষুধসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে। দুর্গত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে নগর ভবন।’

নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘বন্যায় আতঙ্কিত না হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন। যাদের বাসায় বৈদ্যুতিক লাইন পানির নিচে ডুবে গেছে তারা স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবগত করে সিটি করপোরেশনের সহায়তা নিন। অতীতের মতো যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নগরবাসীর পাশে আছে সিলেট সিটি করপোরেশন।’

তিনি জরুরি প্রয়োজনে নগর ভবনে সরাসরি কিংবা হটলাইন নম্বরে (০১৯৫৮২৮৪৮০৭) যোগাযোগ করতে বলেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিত্তবান মানুষ ও প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মেয়র। 

এর আগে, সন্ধ্যা ৭টায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বিশেষ সভা করে সিটি করপোরেশন পরিষদ। সভায় বন্যা পরিস্থিতিতে করণীয়, পানিবন্দিদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থাপনাসহ নানান দিক নিয়ে আলোচনা হয়।